ছবির ফার্স্ট লুক, একটি পোস্টার। তাতেই গেরুয়া শিবিরের ক্ষোভের মুখে পরিচালক। পরিচালক বিনোদ তিওয়ারির বিরুদ্ধে অভিযোগও দায়ের করে ফেলেছেন বিজেপি নেতা আইপি সিং। বাধ্য হয়ে ছবি বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন পরিচালক।
গত শনিবার মুক্তি পায় ছবিটির পোস্টার। পোস্টারে দেখা যাচ্ছে গেরুয়া পোশাক পরিহিত এক সন্ন্যাসী সূর্যের দিকে তাকিয়ে। পাশে একটি গো-শাবক। পোস্টারটি যেভাবে তৈরি হয়েছে তাতে এক নজর দেখলেই বোঝা যায় এ ছবি গোরক্ষপুর মঠের প্রধান পুরোহিত তথা উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের। এবং ‘জিলা গোরক্ষপুর’ নামের ছবিটি তাঁকে নিয়েই তৈরি। এতদূর অবধি সব ঠিকই ছিল। কিন্তু সমস্যা ছিল অন্য যায়গায়। গেরুয়া বসনধারী যে সিদ্ধপুরুষকে পোস্টারে দেখানো হয়েছে একটু ভাল করে দেখলেই বোঝা যাবে তাঁর হাতে রয়েছে একটি পিস্তল। এতেই বেজায় চটেছে বিজেপি শিবির।
তাদের অভিযোগ, এভাবে মুখ্যমন্ত্রীর ভাবমূর্তি নষ্ট করা হচ্ছে। শুধু মুখ্যমন্ত্রী নয়, ভোটের আগে গোরক্ষপুর মঠ এবং হিন্দুধর্মের ভাবমূর্তি নষ্ট করার উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়েছে। এই অভিযোগে পরিচালক বিনোদ তিওয়ারির বিরুদ্ধে মুম্বইয়ে অভিযোগও দায়ের করেছেন বিজেপি নেতা তথা উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মন্ত্রী আই পি সিং।
শুধু তাই নয়, এই ছবিটি বানানোর জন্য জরিমানাও দাবি করেছেন প্রাক্তন বিজেপি মুখপাত্র আইপি সিং। তিনি বলেন পুরো ছবিটিতেই উত্তর প্রদেশের সম্পর্কে নানান ভুল তথ্য তুলে ধরা হবে। প্রসঙ্গত, এই ছবিটির বিরুদ্ধে ১৫৩এ, ২৯৫এ, ৫০০, ৫০১, ৫০৩, ৫০৭ ও ৬৬ এ ধারায় মামালা রুজু করা হয়েছে। এই অভিযোগের বিষয়ে বিভূতিখণ্ড থানার পুলিস আধিকারিক মথুরা রায় বলেন, যে যে অভিযোগ উঠেছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
দেড় বছর আগে পরিচালক বিনোদ তিওয়ারি উত্তরপ্রদেশের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে যোগী আদিত্যনাথের সম্পর্কে তথ্য জোগাড় করতে শুরু করেন। বিশেষ করে আদিত্যনাথের অতীত, রাজনৈতিক মতাদর্শ এবং মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে তাঁর উত্থানের পটভূমিকা তাঁর গবেষণার মূল বিষয় ছিল। সরকারের উচ্চমহল থেকেও শুটিংয়ের জন্য সহযোগিতা করা হয় এই ভেবে যে সম্ভবত বিনোদ তিওয়ারি আদিত্যনাথের বিয়োপিক বানাচ্ছেন। আসলে বিনোদ তিওয়ারি আদিত্যনাথের বিয়োপিক বানাতে চললেও তাতে লুকিয়ে ছিল আদিত্যনাথের সাদা ইমেজের পিছনে এক কালো অতীত। বিনোদ গবেষণায় দেখেছিলেন ২০০৫ সাল থেকে আদিত্যনাথের নামে অসংখ্য পুলিশি অভিযোগ, প্রায় ১৮০০ খ্রিষ্টানকে হিন্দু ধর্মে ধর্মান্তরিত করেছে। শুধু তাই নয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায় নিয়ে বিভেদ ছড়ানোর এবং গোরক্ষপুর (২০১৩) দাঙ্গা তেও তাঁর হাত ছিল বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আদিত্যনাথের এই রূপ ছবিতে ধরতেই অমন পোস্টার বানিয়েছিলেন বিনোদ। তবে মারাত্মক রকম রাজনৈতিক চাপ ও প্রানের হুমকি গুঁড়ো গুঁড়ো করে দিয়েছে তার ছবি বানানোর স্বপ্ন।