মেদিনীপুর কলেজ ময়দানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সভা ঘিরে ছিল অনেক প্রত্যাশা। কিন্তু সভা শেষ হতেই ফাটল প্রত্যাশার ফানুস। খালি হাতেই মোদীর সভা থেকে বাড়ি ফিরতে হল কৃষকদের।
লোকসভা ভোটের আগে কৃষক দরদী প্রমানে মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে গেরুয়া শিবির। ভোটের আগে কৌশলে বাড়ানো হয়েছে ধানের সহায়ক মূল্য। ঘটা করে তার প্রচারেও ব্যস্ত প্রধানমন্ত্রী। বেছে নেওয়া হয়েছিল মেদিনীপুরকে। এতসব দেখে কৃষকরাও অধীর আগ্রহে ছিলেন তাদের রোজগার বৃদ্ধিতে প্রধানমন্ত্রী বোধহয় কিছু ঘোষণা করবেন। কিন্তু বদলে মোদী ভরিয়ে দিলেন প্রতিশ্রুতির বন্যায়।
মেদিনীপুরের সভায় প্রধানমন্ত্রী বললেন, ‘’ ‘আমার সরকার আপনাদেরই সরকার, জনগনের সরকার কৃষক দরদী সরকার। নতুন ভারতের স্বপ্নপূরণ করতে এগিয়ে এসেছে দেশবাসী। আগে রাজ্য এবং দিল্লির সরকার কৃষকদের কথা ভাবেনি। আমরা ভেবেছি বলেই ন্যূনতম সহায়ক মূল্য বেড়েছে কৃষকদের। গ্রাম না এগোলে শহর ও দেশ এগোতে পারে না।’’
এইসব বক্তব্যে চিঁড়ে অবশ্য ভিজল না। মোদীর প্রতিশ্রুতির বহরে চাপা পড়ে গেল আসল বিষয়টাই। কৃষকরা তাঁদের জীবন জীবিকা নির্বাহ করবেন কিভাবে তার কোনও হদিশ এদিন দিতে পারেননি প্রধানমন্ত্রী। বদলে বলেছেন, ‘’২০২২ সালের মধ্যে কৃষকদের আয় দ্বিগুন করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।‘’
সভা থেকে আলু চাষীদের কথা তুলে ধরে বাংলার তৃণমূল সরকারকেও আক্রমণ করছেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘’পর্যাপ্ত হিমঘর নেই বলে বন্যায় আলুর ক্ষতি হয়েছে। তাই আলু চাষীদের জন্য বিশেষ প্রকল্প আনতে চলেছে কেন্দ্র।‘’ বাস্তব অবশ্য বলছে অন্য কথা। কৃষক স্বার্থে একাধিক উদ্যোগ নিয়েছে রাজ্য সরকার। বানানো হচ্ছে হিমঘর। ফড়েরাজ রুখতে রয়েছে কড়া নজরদারি। ‘কৃষি কর্মণে’ও বাংলা কেন্দ্রের স্বীকৃতি পেয়েছে পাঁচবার। তবে এইসব নজরে ছিলনা মোদীর। তাহলে কী শুধই আক্রমণের জন্যই যুক্তিহীন সমালোচনার পথ বেছে নিলেন প্রধানমন্ত্রী?’
প্রতিশ্রুতির বন্যা কৃষক দরদী মোদীর কথায়। স্পষ্ট ভোট রাজনীতির বিষয়টি। কিন্তু ভুয়ো প্রতিশ্রুতিতে কী বাংলা থেকে মিলবে নির্বাচনী ডিভিডেন্ড? প্রশ্নটা থেকেই গেল।