দু’দশকেরও বেশি সময়ে খরা কাটিয়ে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রীর তখত দখল করতে চলেছেন তাঁরা। মুখ্যমন্ত্রী হবেন বালাসাহেব পুত্র উদ্ধব ঠাকরে। শুক্রবারের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হওয়ার পরই আনন্দে মেতে উঠেছিলেন শিবসৈনিকরা। আত্মবিশ্বাসে ডগমগ হয়ে শিবসেনার মুখপাত্র সঞ্জয় রাউতও গতকাল বলেছিলেন, ‘ভগবান ইন্দ্র এলেও বিজেপি সরকার গঠন করতে পারবে না।’ ইন্দ্র আসেননি ঠিকই। কিন্তু ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পাশা উল্টে গেল পুরোপুরি। শিবসেনা নেতাদের ঘুমের ঘোর কাটার আগেই রাজভবনে দ্বিতীয় বারের জন্য মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়ে ফেলেছেন বিজেপির দেবেন্দ্র ফডনবিশ। আর বিজেপিকে সমর্থন জুগিয়ে উপ মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিয়েছেন এনসিপি নেতা তথা শরদ পওয়ারের ভাইপো অজিত পাওয়ার। যা দেখে ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে রাউত আজ বললেন, পিছন থেকে ছুরি মারলেন অজিত পাওয়ার। তাঁর আরও দাবি, শুক্রবারেই অজিতের আচরণ সন্দেহজনক ছিল।
প্রসঙ্গত,শনিবার সকাল ছ’টা নাগাদ মুম্বইয়ের রাজভবনে শপথগ্রহণের পালা মেটে। তার আগে শুক্রবার সন্ধেতেও মুম্বইয়ের ওরলিতে এনসিপি-শিবসেনা-কংগ্রেস বৈঠক বসেছে। অথচ এমনটা যে হতে চলেছে ঘুণাক্ষরেও টের পায়নি কোনও পক্ষই। তবে এদিন সকালে সাংবাদিকদের কাছে সঞ্জয় রাউত দাবি করেছেন, শেষ বৈঠকে সন্দেহজনক আচরণ করছিলেন অজিত। আর তিনি তা নাকি বুঝতেও পেরেছিলেন। তাঁর কথায়, ‘কারও চোখে চোখ রেখে কথা বলেননি অজিত। আইনজীবীর সঙ্গে দেখা করার আছিলায় মাঝপথেই তিনি মিটিং ছেড়ে বেরিয়ে যান। তাঁকে আর ফোনেও পাওয়া যায়নি।’ গোটা পরিস্থিতির জন্যে তাই অজিতকেই দায়ী করছেন রাউত। শরদ পাওয়ারের এ বিষয়ে কিছু করার নেই বলেই মনে করেন তিনি।
এদিন সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের জবাবে শিবসেনা মুখপাত্র
বলেন, ‘গত কুড়ি দিনের বেশি সময় ধরে সরকার গঠন নিয়ে আলোচনা চলছে এনসিপি-র সঙ্গে। অজিত পাওয়ারও সেই আলোচনায় সামিল ছিলেন। তার পর অজিত পাওয়ার যা করলেন তা হল পিছন থেকে ছুরি মারা। মহারাষ্ট্রের মানুষের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করলেন অজিত।’ এখানেই না থেমে তিনি আরও বলেন, অজিত পাওয়ার যা দুর্নীতিপরায়ণ, তাতে ওঁর জায়গা হওয়া উচিত আর্থার জেলে। তা হলে কি এ বার আর্থার জেলে মহারাষ্ট্রের মন্ত্রীসভার বৈঠক হবে? অজিত পাওয়ার আর বিজেপিকে পাপ কি সওদাগর বলেও কটাক্ষ করেন রাউত। সেই সঙ্গে বলেন, রাতের অন্ধকারে যা হয় তা সব সময়েই অশুভ। এই পাপেরও বিনাশ হবে শিগগির। অজিতের পাশাপাশি বিজেপির বিরুদ্ধেও মুখ খুলেছে শিবসেনা। তাদের অভিযোগ, কেন্দ্রে সরকারে থাকার সুবাদে যা নয় তাই করছেন মোদী-শাহ। আজ গণতন্ত্রের কালো দিন।