গত চার দশকে এই প্রথম গ্রামে চাহিদা এক ধাক্কায় কমে গিয়েছে অনেকটা। কারণ জীবনধারণের জন্য খরচই কমিয়ে দিয়েছেন গ্রামের মানুষ। সাত বছর আগেও প্রতি মাসে যে পরিমাণ খরচ তাঁরা করতেন বা করতে পারতেন, এখন তাও করছেন না। কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান মন্ত্রকের অধীনে ন্যাশনাল স্যাম্পেল সার্ভে অর্গানাইজেশনের সমীক্ষায় উঠে এল এই তথ্য।
২০১৭ সালের জুলাই মাস থেকে ২০১৮ সালের জুন মাস পর্যন্ত এই সমীক্ষা চালানো হয়েছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, গ্রামের মানুষের মাথাপিছু মাসিক খরচ ২০১১-১২ আর্থিক বছরের তুলনায় ৮ শতাংশেরও বেশি কমে গিয়েছে। হিসাব মতো ২০১১-১২ সালে গ্রামে মাথা পিছু মাসে খরচের পরিমাণ ছিল ১২১৭ টাকা। তা কমে ২০১৭-১৮ সালে হয়েছে ১১১০ টাকা।
শহরের মানুষের খরচ অবশ্য বেড়েছে। কিন্তু সেই বৃদ্ধির হারও মূল্যবৃদ্ধির তুলনায় একেবারেই নগন্য। মাত্র ২ শতাংশ। ২০১১-১২ সালে গড়ে শহরের মানুষ মাথাপিছু মাসে খরচ করত ২২১২ টাকা। তা বেড়ে হয়েছে ২২৫৬ টাকা।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, গ্রামে ও শহরে চাল, গম ইত্যাদি বাবদ খরচ কমিয়েছে মানুষ। গ্রামে তা কমেছে ২০ শতাংশ হারে, শহরে ৮ শতাংশ হারে। নুন, চিনি, মশলা বাবদ খরচও গ্রামে ও শহরে অন্তত ১৫ শতাংশ কমেছে। এ ছাড়া ডাল, ভোজ্য তেল, ফলমূল সবই কেনা কমিয়েছেন গ্রাম-শহরের মানুষ।
তাৎপর্যপূর্ণ হল, এই রিপোর্টও নাকি চেপে রেখেছিল ন্যাশনাল স্যাম্পেল সার্ভে অর্গানাইজেশন। কারণ রিপোর্টে নানান নেতিবাচক মন্তব্য রয়েছে। ঠিক যে ভাবে লোকসভা ভোটের আগের এনএসএসও-র আর একটি রিপোর্ট চেপে রাখা হয়েছিল। তাতে বলা হয়েছিল, গত চার দশকে এই প্রথমে কর্মসংস্থানের এত খারাপ অবস্থা দেশে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এর থেকেই বোধগম্য দেশে কতটা আচ্ছে দিন এসেছে! বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর মোদ্দা মানে দাঁড়াচ্ছে একটাই। দেশে দারিদ্র বেড়েছে। তা কোনও ভাবেই কমেনি। মানুষ খরচ কমিয়ে দেওয়ার অর্থই হল, জিনিসপত্রের চাহিদা কমছে। আর চাহিদা কমলে উৎপাদনও কমবে। তাতে ধাক্কা খাবে দেশের অর্থনীতি।