মহারাষ্ট্রের মহাজোট নিয়ে আতান্তর কাটার নামই নেই। নির্বাচনে জিতে যাওয়ার পরও সরকার গঠনে এত সমস্যা এর আগে হয়তো ভারতের রাজনীতি দেখেনি। সরকার ও মুখ্যমন্ত্রী পদ নিয়ে ভাগাভাগি ইস্যুতে এই মুহূর্তে কার্যত সম্মুখসমরে পদ্ম-বাঘ বাহিনী। শিবসেনার দাবি ছিল, আড়াই বছরের জন্য মুখ্যমন্ত্রিত্ব দিতে হবে তাদের। উদ্ধব ঠাকরে জানিয়েছিলেন, লোকসভার সময়ই অমিত শাহের সঙ্গে কথা হয়ে গিয়েছিল ৫০-৫০ ভাগের। কিন্তু জোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর সেই প্রতিশ্রুতি কার্যত মানতে নারাজ বিজেপি। দেবেন্দ্র ফড়ণবীশ ঘোষণাই করে দিয়েছেন যে তিনিই মুখ্যমন্ত্রী থাকবেন! এই জায়গায় দাঁড়িয়ে অ-বিজেপি সরকারের ইঙ্গিত মিলেছে। সেই জল্পনাই ফের উস্কে দিলেন শিবসেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকরে। তাহলে কি পদ্ম ছাড়ার ইঙ্গিত সেনার?
জোট জটিলতা নিয়ে মুখ খুলে কার্যত বিস্ফোরণ ঘটালেন উদ্ধব ঠাকরে। বললেন, ‘বিজেপির সঙ্গে জোট ভাঙার কোনও ইচ্ছা নেই তাঁদের। কিন্তু ক্ষমতা ভাগাভাগি করার প্রতিশ্রুতি বিজেপিকে মানতে হবে। লোকসভার সময় যে প্রতিশ্রুতি তারা দিয়েছিল, আমরা শুধু চাই সেটা পূরণ হোক।’ এরপরেই কার্যত বুক ঠুকে ঠাকরে মন্তব্য করেন, ‘আড়াই বছরের জন্য মুখ্যমন্ত্রিত্ব দিতে হলে বিজেপি ফোন করুক, তা না হলে ফোন করা বা আলোচনা করার কোনও প্রয়োজন নেই। আমাদের দল নিজেদের ক্ষমতায় এই জায়গায় পৌঁছেছে, আমাদের বিজেপির ঢাল দরকার নেই’! বিজেপির সঙ্গে সংঘাতের পর কংগ্রেস, এনসিপি শিবসেনার সঙ্গে আলোচনায় গিয়েছে। সেই প্রেক্ষিতে তাদের সঙ্গে জোটের সম্ভাবনাও তৈরি হয়েছিল বাঘবাহিনীর। কিন্তু তা হয়নি।
দেবেন্দ্র ফডনবিশ মুখ্যমন্ত্রিত্ব পদ নিয়ে ঘোষণা করার পর থেকে পরিস্থিতি আরও জটিল হয় মারাঠাভূমে। তবে সেই পরিস্থিতি সামাল দিয়ে বিজেপির তরফে জানানো হয় শিবসেনার সঙ্গে আলোচনা হবে। কিন্তু পরিস্থিতি বদলানোর কোনও ইঙ্গিতই নেই। উল্টে আরএসএস-কে ময়দানে নামার আর্জি জানিয়েও লাভ হয়নি শিবসেনার। কারণ, বিজেপির তরফে মাঠে নেমে পড়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নীতীন গড়করি। তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, দেবেন্দ্র ফড়ণবীশের নেতৃত্বেই মহারাষ্ট্রে সরকার গঠন হবে। মহারাষ্ট্রের সরকার গঠন নিয়ে আরএসএস-এর কোনও যোগাযোগ নেই।