লোকসভা ভোটের পরই সরকারি কাজে কাটমানি বন্ধ করতে কিড়া অবস্থান নিছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার কাটমানি ইস্যুতে সরব হলেন তাঁরই অনুগত সৈনিক অনুব্রত মণ্ডল ওরফে কেষ্ট। আপনাদের কাছে সরকারি বাড়ির জন্য কোনও পঞ্চায়েত সদস্য বা দলের নেতা টাকা চাইলে তাকে বেঁধে পেটান। ঠিক এমনই মন্তব্য শোনা গেল বীরভূমের জেলা তৃণমূল সভাপতির মুখে।
রবিবার দুপুরে মহম্মদবাজার ব্লক তৃণমূলের পক্ষ থেকে কর্মীসভা ও বিজয়া সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানেই অনুব্রত বলেন, ‘আপনাদের নামে সরকারি যে বাড়ি এসেছে, সেই বাড়ি করার জন্য যদি কোনও পঞ্চায়েত সদস্য বা তৃণমূলের কোনও কর্মী টাকা চায়, তা হলে তাকে বেঁধে পেটান। আর এটা সকলের কাছে প্রচার করে দিন, কেউ টাকা চাইলে তাকে যেন বেঁধে পেটায়!’
প্রসঙ্গত, লোকসভা ভোটের আগে থেকেই ব্লকে ব্লকে সভা করে সরকারি প্রকল্পে টাকা না চাওয়ার জন্য দলীয় নেতা-কর্মীদের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন অনুব্রত। কিন্তু তা সত্ত্বেও লোকসভা ভোটের পরে পরেই ‘কাটমানি’র অভিযোগ ঘিরে উত্তাল হয়েছে বীরভূমের বিভিন্ন প্রান্ত। সেই কারণেই গতকালের সভামঞ্চ থেকে অনুব্রত এমন ফরমান দিলেন বলে মনে করা হচ্ছে।
গতকাল আসন সংখ্যার প্রতিশ্রুতিও শোনা গিয়েছে অনুব্রতের মুখে। তাঁর দাবি, ‘কারও কাছে যদি কলম থাকে, তাহলে লিখে নিন, আমি আপনাদের আগাম জানিয়ে দিচ্ছি সামনের ভোটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২৩০টি আসন পেয়ে পুনরায় মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে বসবেন।’ এনআরসি ইস্যুতেও বিজেপিকে একহাত নিয়েছে জেলা তৃণমূল সভাপতি।
তিনি বলেন, ‘বিজেপি সরকার অন্য রাজ্যে বড় বড় জেল বানিয়ে সেখানের নিরীহ আদিবাসী ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষদের বিনা কারণে জেলে ঢোকাচ্ছে। যদি ক্ষমতা থাকে তা হলে এই রাজ্যে একটি জেল করে দেখাক। এখানে যে জেল বানাতে আসবে তার হাত ভেঙে দেব! আপনারা কোনও চিন্তা করবেন না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বেঁচে থাকতে বাংলায় এনআরসি চালু করতে দেব না।’
ওই কর্মীসভায় উপস্থিত ছিলেন জেলার দুই মন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় ও চন্দ্রনাথ সিংহ। ছিলেন সহ-সভাপতি অভিজিৎ সিংহ ও মলয় মুখোপাধ্যায়, সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী। তাঁদের সকলের উপস্থিতিতে বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেয় প্রায় ৩০০টি পরিবার।
মহম্মদবাজারের আঙ্গারগড়িয়া পঞ্চায়েতের রাজ্যধরপুর গ্রাম থেকে সমীর দাসের নেতৃত্বে ২০০ জন বিজেপি কর্মী তৃণমূলে যোগ দেন এবং মহম্মদবাজার পঞ্চায়েতের বিজেপির যুব মোর্চার নেতা বিজয় ভাস্করের নেতৃত্বে বিজেপির ১০০ জন কর্মী জেলা সভাপতির হাত থেকে পতাকা নিয়ে তৃণমূলে যোগ দেন।