ভূস্বর্গে রোজগারের আশায় গিয়ে জঙ্গীদের আক্রমণে মুর্শিদাবাদের ৫ জন শ্রমিকের মৃত্যুর খবর শুনে আর সেখানে থাকতে সাহস পাচ্ছেন না সাগরদিঘির ব্রাহ্মণী ও শেখপাড়ার শ্রমিকরা। তাই শনিবার বাড়ি ফিরে এসেছেন ৩০ জন। এই শ্রমিকরা থাকতেন ঘটনাস্থল থেকে ১০০ কিমি বা ৫০ কিমি দূরে। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে কাশ্মীরে থাকা বাঙালি শ্রমিকেরা বাংলায় ফিরলেন।
বাড়ি ফিরে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন নেকসাদ শেখ, মুরসালিম শেখ, জাহাঙ্গির শেখরা। তাঁরা কাশ্মীরের সোপিয়ান, কুলগাম জেলার বিভিন্ন গ্রামে থাকতেন। ২৯ অক্টোবর রাতে যখন ৫ জনকে গুলি করে খুন করে জঙ্গিরা। তখন যে তিনজনের নাম জানা গিয়েছিল, তার মধ্যে ছিল মুরসালিম শেখের নাম। সাগরদিঘি থানার পুলিশ ব্রাহ্মণী গ্রামে গিয়ে মুরসালিমের বাড়িতে এসে খবর দিয়ে যায়। তখন তার বাড়ির লোকজন বলেছিলেন, একটু আগেই তাদের সঙ্গে কথা হয়েছে মুরসালিমের।
রবিবার মুরসালিম, জাহাঙ্গিররা বলেন, “কাশ্মীরে আমাদের ঘরে কোনও টিভি ছিল না। নেট ছিল না। ফলে বাড়ি থেকে খবর না দিলে বুঝতেই পারতাম না আমাদের পাশে বাহালনগরের মানুষকে মেরে ফেলেছে জঙ্গীরা। এরপরই আমরা কোনও রকমে জম্মু স্টেশনে পৌঁছই। রাস্তায় বারবার আমাদের তল্লাশি করা হয়”। মুরসালিম আরও বলেন, “বিজেপি সরকারের জন্য আজ আমাদের কাজ হারাতে হল। পালিয়ে আসতে বাধ্য হলাম। এখানে কে কাজ দেবে আমাদের?”
গত ২০০২ সাল থেকে ব্রাহ্মণী, শেখপাড়ার বাসিন্দারা কাশ্মীর যাচ্ছেন। নেকসাদ বলেন, “এতদিন কোনও সমস্যা হয়নি। নিশ্চিন্তে ঘুরতাম। গত তিনমাস ধরে গন্ডগোল শুরু হয়। কিন্তু ৫ জনকে মেরে ফেলার পর মালিক বললেন, ‘অবস্থা ভাল নয়। এখন বাড়ি যাও। পরিবেশ স্বাভাবিক হলে, খবর দিলে তবেই আসবে”।