খানাকুলে রাজনৈতিক অশান্তি অব্যাহত। খানাকুলের কিশোরপুর-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের ১নম্বর সংসদ এলাকায় তৃণমূল নেতার বাড়ি ভাঙচুর ও লুটের ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। শাসক দলের অভিযোগ, রাতের অন্ধকারে বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা হামলা চালিয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার রাতে।
স্থানীয় সূত্রে রখব্র, শনিবার রাত প্রায় ১০টা নাগাদ বাড়িতে খাওয়া-দাওয়া করছিলেন তৃণমূল নেতা রাসবিহারী দলুই। সেই সময় আটটি বাইকে চেপে ১০-১২ জনের একটি দুষ্কৃতী দল তাঁর বাড়িতে চড়াও হয়। দুষ্কৃতীরা প্রথমেই তাঁর বৃদ্ধ বাবা-মার থাকার ঘরের দরজা ভাঙে বলে জানা গিয়েছে। রাসবিহারীবাবুর মা পদ্মাদেবী বলেন, রাতের অন্ধকারে মুখে রুমাল বাঁধা অবস্থায় ওরা আমাদের ঘরের দরজা ভেঙে ভিতরে ঢোকে। তারপর ওরা আমার ছেলেকে খুঁজতে শুরু করে। বাধা দিতে গেলে ওরা আমাকে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করতে শুরু করে। সেই সময় পাশের একটি ঘরে ছিল রাসবিহারী। দুষ্কৃতীরা ঘরে থাকা সমস্ত আসবাবপত্র তছনছ করে। সোনার গয়না, নগদ টাকা ও মোবাইল ফোন নিয়ে চম্পট দেয়। আমি ওদের আটকানোর চেষ্টা করলে আমাকে মারধরও করে। পরে ছেলেকে না পেয়ে দুষ্কৃতীরা আমাদের প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে চলে যায়।
খানাকুল-১ ব্লকের তৃণমূলের সভাপতি অভিজিৎ বাগ বলেন, এই ঘটনা নতুন নয়। এর আগেও একাধিকবার খানাকুলের সীমান্ত লাগোয়া পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বিজেপির সন্ত্রাসবাদীর দল আমাদের এখানে এসে তৃণমূলের কর্মী সমর্থকদের বাড়ি ভাঙচুর ও মারধরের ঘটনা ঘটিয়েছে। শনিবার রাতেও একই কায়দায় তারা সন্ত্রাস চালিয়েছে। এমনকী, বাড়িতে থাকা মূল্যবান সামগ্রী ও গ্যাস সিলিন্ডার নিয়ে চম্পট দিয়েছে বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। বিজেপি রাজনৈতিকভাবে জনসংযোগ করতে পারছে না। যে কারণে ওরা হিংসার পথ বেছে নিয়েছে।
রাসবিহারীবাবু বলেন, এর আগেও আমাকে একাধিকবার বিজেপির লোকজন প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছিল। আমার অপরাধ, আমি শাসক দলের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত আছি। এই অপরাধে ওরা আমাকে রাতের অন্ধকারে প্রাণে মারতে এসেছিল। বাড়ির জানালা দরজা, টিনের চালা-সহ ঘরে থাকা ট্রাঙ্ক ও অন্যান্য সামগ্রী ভাঙচুর করে বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা।
জানা গিয়েছে, খানাকুল-১ ব্লকের অধীনে রয়েছে কিশোরপুর-১ গ্রাম পঞ্চায়েত। এই পঞ্চায়েতের মোট ১১টি গ্রাম সংসদ রয়েছে। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে ১১ সংসদেই জয় লাভ করে তৃণমূল। তারপর থেকেই কিশোরপুর-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূলের প্রধান বেশ কয়েকজন সদস্যকে নিয়ে শাসক দল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান করেন। তবে পরবর্তী সময়ে তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধান সহ অন্যান্য সদস্যরা আবারও শাসক দলে ফিরে আসায় এলাকায় সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরি করতে চাইছে বিজেপি।