মঙ্গলবার দক্ষিণ কাশ্মীরের কুলগামে বাংলার মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা ৫ শ্রমিককে গুলি করে হত্যা করে সন্ত্রাসবাদীরা। আইসিসের কায়দায় একসারিতে দাঁড় করিয়ে, ওই ৫ জনকে গুলিতে ঝাঁঝরা করে দেওয়া হয়। ঘটনাস্থলেই তাঁদের মৃত্যু হয়। আর তারপর মৃতের পরিবার থেকে গ্রামবাসী, মন্ত্রী, সাংসদ- সকলেই এখন একযোগে আঙুল তুলছেন কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের দিকে। সবার অভিযোগ, কাশ্মীরে কাজ করা ভিন রাজ্যের শ্রমিকদের কোনও নিরাপত্তা নেই। এমনটা আগে ছিল না। গত ৫ আগস্ট ৩৭০ ধারা বিলোপের পর থেকেই ভিন রাজ্যের মানুষরা কাশ্মীরে নিরাপদ নন।
মঙ্গলবার রাতে জঙ্গীদের গুলিতেই ৫ শ্রমিকের প্রাণ হারানোর খবর পেয়েই মৃতদের বাড়িতে যান রাজ্যের মন্ত্রী জাকির হোসেন। তিনি বলেন, ‘বাঙালি শ্রমিকদের মৃত্যুর দায় কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকেই নিতে হবে। বাংলার বহু মানুষ ওখানে কাজ করেন। তিন মাস ধরে ওখানে মোবাইল পরিষেবা বন্ধ। তাঁরা কী অবস্থায় আছেন, আমরা কেউ জানি না। আমরা এই মানুষদের পাশে আছি, থাকব।’ আর মৃত রফিকুলের দাদা সফিকুল শেখ তো স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, ‘আমি গত ৯ বছর ধরে কাশ্মীরে কাজ করতে যাচ্ছি। এমন ঘটনা আগে ঘটেনি। আমার ভাই যে মরে গেল, প্রধানমন্ত্রী কী জবাব দেবেন?’
গত ১০ বছর ধরে কাশ্মীরে কাজ করতে যান বাহালনগরের মিরাজ শেখ। মঙ্গলবার রাত নটা নাগাদ কাশ্মীর থেকে বাড়ি ফিরেছেন। তিনি রাতে শোনেন, তাঁরই ৫ প্রতিবেশী জঙ্গীদের গুলিতে মারা গেছেন। হতবাক হয়ে যান মিরাজ। তিনিও এই ঘটনার জন্য সরাসরি কেন্দ্রীয় সরকারের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন। বলেন, ‘১০ বছর ধরে কাশ্মীরে কাজ করতে যাচ্ছি। কখনও কোনও সমস্যা হয়নি। সেনাও কিছু বলেনি। জঙ্গীরাও ভয় দেখায়নি। কিন্তু গত দু’-তিন মাসে পরিস্থিতি বদলে গেছে। আর এটা হয়েছে বিজেপি সরকারের জন্য। তারাই ৩৭০ ধারা তুলে দিয়েছেন। ভিন রাজ্যের মানুষদের দেখলেই এখন জঙ্গীরা গালাগালি দেয়। আমার গ্রামের ৫ জন যেভাবে মারা গেল তার দায়িত্ব কী বিজেপির মন্ত্রীরা নেবেন?’