লোকসভা নির্বাচনের পরে হিড়িক উঠেছিল দলবদলের। সেই স্রোতে গা ভাসিয়ে বেশ কিছু তৃণমূল নেতাও যোগদান করেছিলেন বিজেপিতে। কিন্তু কিছুদিন যেতে না যেতেই মোহভঙ্গ হয়েছে সকলের। তাই গেরুয়া শিবির পরিত্যাগ করছেন সকলেই। সকলেই বুঝতে পারছেন মানুষের জন্যে কাজ করার একমাত্র ঠিকানা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল। এই একই চিত্র এবার উঠে এল কাটোয়াতেও।কাটোয়া বিধানসভা এলাকায় উৎসবের মরশুমে দফায় দফায় বহু বিজেপি কর্মী তৃণমূলে ফিরছেন।
পুজোর মরশুমে শহরের ১১ নম্বর ওয়ার্ড, পানুহাট, কাটোয়া-১ ব্লকের খাজুরডিহি পঞ্চায়েতের একাইহাট, দাঁইহাট পুরসভা এলাকা থেকে চলতি মাসে কয়েকশো বিজেপি কর্মী তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। জানা গিয়েছে, ১৩ অক্টোবর কাটোয়া শহরের সংহতি মঞ্চে ১১ নম্বর ওয়ার্ডের প্রায় ৩০০ এবং ২৬ অক্টোবর কালীপুজোর আগে খাজুরডিহি পঞ্চায়েতের একাইহাট এলাকায় প্রায় ২৫০জন বিজেপি কর্মী তৃণমূলে যোগ দেন।
তৃণমূল নেতাদের দাবি, ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচীতে এলাকায় সাধারণ মানুষের বাড়ি বাড়ি যাওয়ার ফলে দলের উপর মানুষের আস্থা ফিরছে। এছাড়া এনআরসি আতঙ্ক মানুষের মধ্যে প্রভাব ফেলেছে। তাই ফলে বিজেপি ছেড়ে অনেকেই তৃণমূলে ফিরছেন। এমনকী, ভিতরে ভিতরে অনেক বিজেপি নেতা-কর্মীরা তৃণমূলে ফিরতে চেয়ে যোগাযোগ রাখছে বলেও তৃণমূলের দাবি।
তৃণমূলের তরফে আরও জানানো হয়েছে, একের পর এক ভ্রান্ত নীতির জন্য সাধারণ মানুষ কেন্দ্রীয় সরকারের উপর বিরক্ত হয়ে বিজেপি থেকে মুখ ফেরাচ্ছেন। কেন্দ্রীয় সরকারের এনআরসি নীতির জন্য অনেকেই আতঙ্কে দল ছাড়ছেন। এমনকী, বিজেপির কট্টর সমর্থকরাও মুখ ফেরাচ্ছেন। পানুহাটে বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে আসা কর্মী-সমর্থকদের দাবি, লোকসভা নির্বাচনের আগে বিজেপির নেতারা পাশে থাকার বার্তা দিয়েছিলেন। কিন্তু, বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, নেতাদের কাউকেই পাচ্ছি না। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, রেশন কার্ড, আধারকার্ডে নাম সংযুক্তিকরণ নিয়ে আমরা আতঙ্কে রয়েছি। বিজেপি নেতাদের পাশে পাচ্ছি না। তাই আমরা তৃণমূলের স্থানীয় বিধায়কের উপরেই ভরসা রাখতে হচ্ছে।
এবিষয়ে কাটোয়ার তৃণমূল বিধায়ক তথা পুরসভার চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, প্রচুর মানুষ বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগদান করছেন। তাঁরা কেন্দ্রীয় সরকারের ভ্রান্ত নীতি এবং এনআরসি আতঙ্কের জেরেই বিজেপি থেকে মুখ ফেরাচ্ছেন। অনেক বিজেপি নেতা-কর্মী তৃণমূলে ফিরতে চেয়ে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন।