দীপাবলির রাতে দূষণ নিয়ন্ত্রণ করাই ছিল এবার পুলিশের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। কলকাতা সফল হল কিন্তু পারল না দিল্লী। আবারও কালো ধোঁয়ায় ঢাকল রাজধানী। বাজি ফাটানো নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশিকা সত্ত্বেও আবার দিল্লীর বাতাসের মান নেমে গেল ‘খুব খারাপ’ ক্যাটাগরিতে।
আলোর উৎসবে যখন মেতে উঠেছে গোটা দেশ তখন তার সঙ্গেই জড়িয়ে গিয়েছে তীব্র দূষণের আশঙ্কাও। শব্দবাজির কানফাটানো আওয়াজ আর বিষ বাতাস কি এ বারও ভবিতব্য? এই আশঙ্কা অবশ্য উড়িয়ে দিয়েছে কলকাতা। রবিবার দীপাবলির রাত পেরনোর পর সোমবার কলকাতায় এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) ২০০ ছাড়ায়নি। তা কিছুটা স্বস্তিদায়ক বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। একই ছবি বাণিজ্য নগরী মুম্বইয়েরও। সেখানেও এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স ২০০-র নীচেই ঘোরাফেরা করেছে।
অত্যন্ত উদ্বেগের ছবি ধরা পড়েছে দেশের রাজধানীতে। বায়ুদূষণ নিয়ে এমনতিতেই জেরবার দিল্লীবাসী। এ বারের দীপাবলিতেও সেই ‘রেওয়াজ’ বহাল রইল। দিল্লী সরকারের নানা প্রচার সত্ত্বেও এ বারও দূষণের গেরো থেকে কাটিয়ে উঠতে পারেনি দিল্লী। রবিবার দীপাবলির রাতে কানাফাটানো আওয়াজ এবং বাজি থেকে নির্গত বিষাক্ত গ্যাসের জেরে সোমবার মাত্রা ছাড়িয়েছে দিল্লীর একিউআই। দীপাবলির পরের দিন সকালে দিল্লী ও নয়ডার গড় একিউআই নেমে যায় যথাক্রমে ৩০৬ ও ৩৫৬-তে, যা ‘ভেরি পুওর’ বা খুব খারাপ মাত্রায়। গুরুগ্রামের গড় একিউআই-ও পৌঁছে যায় ২৭০-তে, যা ‘পুওর’ অর্থাৎ খারাপ বলেই ধরা হয়।
দূষণে লাগাম পরাতে নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে থাকা বাজি পোড়ানোর জন্য দু’ঘণ্টার ছাড় এ বারও দিয়েছিল দিল্লী প্রশাসন। কিন্তু, মালব্যনগর, লাজপত নগর, কৈলাস হিলস, জঙ্গপুরা, বুরারি, লক্ষ্মীনগর-সহ বহু জায়গা থেকেই সেই সীমা অতিক্রম করে বাজি পোড়ানোর অভিযোগ উঠেছে। একই ছবি দেখা গিয়েছে গাজিয়াবাদেও। যার তীব্র প্রভাব পড়েছে দিল্লীর বাতাসে। ফল ভোগ করতে হয়েছে সাধারণ মানুষকেও। এ দিন ভোর চারটে নাগাদ দিল্লির একিউআই একসময় সর্বোচ্চ ৯৯৯-তে পৌঁছে যায়। সকাল সাতটা নাগাদ অবশ্য তা কিছুটা নেমে দাঁড়ায় ৫০৬-তে।
এবার উৎসবের প্রাক মুহূর্ত থেকে দূষণের বিরুদ্ধে লাগাতার প্রচারে নামে কলকাতা পুলিশ ও দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ। শব্দবাজির দৌরাত্ম্য রুখতে দীপাবলির আগে থেকেই ময়দানে নেমেছিল পুলিশ। কলকাতা ও বিভিন্ন জেলায় নাকা চেকিং ও তল্লাশি চালানো হয়। তাতে প্রচুর নিষিদ্ধ শব্দবাজিও উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়াও, শব্দবিধি ভাঙলে জেল বা জরিমানার মতো শাস্তিও অনেকটা প্রভাব ফেলেছে। ফলে, দীপাবলির রাতে যেখানে কলকাতাবাসীর সাধারণত কান ঝালাপালা হওয়ার জোগাড় হয়, সেখানে রবিবারের রাত অনেকটাই ‘শান্ত’ ছিল।