২০০২-এর গুজরাত দাঙ্গা থেকে ইশরত জাহান ভুয়ো সংঘর্ষ মামলা— মোদী ও অমিত শাহ, দু’জনেরই রাজনৈতিক কেরিয়ারের স্পর্শকাতর সময়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় দেখা গিয়েছে উড়িয়া অফিসার গিরিশচন্দ্র মুর্মু। গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন মোদীর প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি হিসেবে কাজ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরে মোদী তাঁকে দিল্লিতে আনেন। মুর্মুর বিরুদ্ধে গুজরাত দাঙ্গার তদন্তে তৈরি নানাবতী কমিশনের সামনে সরকারি সাক্ষীদের ‘শেখানো-পড়ানো’-র অভিযোগ উঠেছিল। ইশরত জহান ভুয়ো সংঘর্ষ মামলায় সিবিআই তাঁকে জেরাও করে। সংবাদমাধ্যমে ফাঁস হওয়া রেকর্ডিংয়ে অভিযোগ ওঠে, মুর্মু-সহ গুজরাতের মন্ত্রী-আমলারা মিলে ওই ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা করছিলেন। নতুন কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল জম্মু-কাশ্মীরের প্রথম উপরাজ্যপাল হিসেবে সেই মুর্মুকে নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিল মোদী সরকার।
সরকারিভাবে এখনও আত্মপ্রকাশ ঘটেনি। তবে তার আগেই নতুন কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল জম্মু–কাশ্মীর এবং লাদাখের উপরাজ্যপালের নাম ঘোষণা করা হল। শুক্রবার রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে এই ঘোষণা করা হল। রাষ্ট্রপতি প্রস্তাবিত জম্মু–কাশ্মীরের প্রথম উপ–রাজ্যপাল হিসাবে নিযুক্ত হলেন প্রাক্তন আইএএস অফিসার তথা কেন্দ্রীয় ব্যয় সচিব গিরিশচন্দ্র মুর্মু। আরেক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল লাদাখের প্রথম উপ–রাজ্যপাল হচ্ছেন প্রাক্তন আইএএস অফিসার রাধাকৃষ্ণ মাথুর। অন্যদিকে, গোটা জম্মু–কাশ্মীরের বর্তমান রাজ্যপাল সত্যপাল মালিককে বদলি করে নিয়ে যাওয়া হল গোয়ায়।
২০১৮ সালের আগস্ট থেকে উপত্যকায় সাংবিধানিক প্রধানের দায়িত্বভার সামলাচ্ছিলেন সত্যপাল মালিক। তিনি রাজ্যপাল থাকাকালীনই এযাবৎকালে ভারতের ইতিহাসের অন্যতম ঘটনাটি ঘটেছিল গত ৫ আগস্ট। ওই দিন কেন্দ্র ৩৭০ ধারা এবং ৩৫এ ধারার বিলুপ্তি ঘটায়। পাশাপাশি জম্মু–কাশ্মীর এবং লাদাখকে দু’টি পৃথক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসেবে ঘোষণা করে। এরপর এবার নয়া উপ–রাজ্যপালও নিযুক্ত করা হল।
কিন্তু কেন এভাবে সরানো হল সত্যপালকে। মূলত অতিরিক্ত মুখ খুলে বিতর্ক তৈরির জন্যই তাঁকে সরানো হল বলে সরকারি সূত্রের ব্যাখ্যা। মালিক নিজেই সম্প্রতি বলেছিলেন, মুখ ফস্কে এক দিন কথা বলার জন্য তাঁকে তিন দিন ধরে ব্যাখ্যা দিতে হয়!