গায়ে সেই পুরোনো ভারতীয় দলের ব্লেজার। যেটা পরে প্রথম খেলতে নেমেছিলেন দেশের জার্সিতে। চোখে একটু মোটা ফ্রেমের চশমা। পরিপাটি করে আঁচড়ানো চুল। বুধবার দুপুরে মুম্বইয়ে বিসিসিআইয়ের অফিসে নতুন বোর্ড প্রেসিডেন্ট সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় যখন মিডিয়ার সামনে এলেন, তখন দারুণ ঝকঝকে দেখাচ্ছিল বাংলার মহারাজকে। তার একটু আগে বোর্ডের বার্ষিক সাধারণ সভায় সরকারি ভাবে বোর্ড প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করা হয়েছে তাঁকে।
মিডিয়ার সামনে যখন এলেন, সেই মুহূর্তে অজস্র ক্যামেরার ফ্ল্যাশের ঝলকানি। সামনে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের সাংবাদিকদের ঠাসা ভিড়। ঠিক যেন বেশ কয়েক বছর আগের সেই ছবি, যখন ভারত অধিনায়ক হিসেবে প্রেস কনফারেন্স করতে আসতেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। এ সব দেখেই বোধহয় মেজাজ আরও খুশ হয়ে গিয়েছিল মহারাজের। প্রশ্নোত্তর পর্ব শুরু হওয়ার আগে নিজে থেকেই তিনটে জিনিস স্পষ্ট করে দিলেন সৌরভ।
এক, ভারতীয় টিমের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির নাম বিরাট কোহলি। মাঠে তাঁর ক্রিকেট জীবনটাকে আরও সহজ করাই আসল কাজ। তাঁর দাবি, বিরাটের টিমই বিশ্বসেরা। দুই, মহেন্দ্র সিং ধোনির মতো চ্যাম্পিয়নের জীবন তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে যেতে পারে না। সবার আগে ক্রিকেটারদের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি। এবং তিন, যে ভাবে টিমের ক্যাপ্টেন হিসেবে দেশকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন, সে ভাবেই ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডকেও এগিয়ে নিয়ে যাবেন।
বিরাটের সঙ্গে দেখা হবে আজ। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে টি-টোয়েন্টি সিরিজের টিম নির্বাচনে। সাংবাদিক বৈঠকে সেই প্রসঙ্গ উঠতেই সৌরভ বললেন, ‘বিরাট ভারতীয় ক্রিকেটের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। কারণ ও দেশের ক্রিকেট টিমের ক্যাপ্টেন। আমার সঙ্গে যখন কথা হবে, আমি এটাই বলব, সব রকম সাহায্যের জন্য আমি প্রস্তুত। বিরাট তার টিমকে বিশ্বসেরা করতে চায়। গত তিন-চার বছর ধরে আমাদের টিম যে ভাবে খেলছে, বিশ্বের অন্যতম সেরা টিম আমরাই।’ একইসঙ্গে তিনি উড়িয়ে দিয়েছেন ডুয়েল ক্যাপ্টেন্সির প্রসঙ্গও। এদিন সৌরভ সাফ বলে দিলেন, ‘আমার মনে হয় না, এটা নিয়ে এখন কোনও প্রশ্ন ওঠা উচিত। ভারতীয় টিম এখন জেতার মধ্যেই রয়েছে।’
তিনি বোর্ড প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রথম সাংবাদিক সম্মেলনে এসেছেন, মহেন্দ্র সিং ধোনি নিয়ে প্রশ্ন হবে না, তা হয় না কি? সৌরভ একদম সোজা ব্যাটে খেললেন। বলে দিলেন, ‘ধোনির কীর্তি ভারতকে গর্বিত করেছে। এক জন চ্যাম্পিয়ন এত তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে যেতে পারে না। আমি যখন বাদ পড়েছিলাম, তখন গোটা বিশ্ব ভেবেছিল, আমি হয়তো আর মাঠে ফিরব না। তারপরেও আমি ফিরেছিলাম এবং চার বছর দেশের হয়ে খেলেছিলাম। আমি যতক্ষণ রয়েছি, প্রত্যেক ক্রিকেটার তার যোগ্য সম্মান পাবে।’ এই একটা কথাতেই যেন স্পষ্ট করে দিলেন অবস্থান। এটাও বললেন, ‘ধোনির সঙ্গে শীঘ্রই আমি কথা বলব।’