‘অর্থনৈতিক উন্নয়নের মতোই গত দুবছর ধরে স্বাস্থ্যক্ষেত্রেও ভুল দিশায় চলছে ভারত।’ প্রশাসনের বিরুদ্ধে ফের সরব নোবেল জয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন। পর্যাপ্ত প্রস্তুতি ছাড়াই স্বাস্থ্য পরিষেবায় বেসরকারি বিনিয়োগের ফলে অস্বাস্থ্যকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, বলে অভিযোগ তাঁর।
ডঃ অভিজিত চৌধুরীর সঞ্চালনায় আইসিসিআর-এ চিকিৎসক সমীরণ নন্দী, চিকিৎসক সঞ্জয় নাগরাল এবং কেশব দেশিরাজু সম্পাদিত ‘হিলার্স অর প্রিডেটরস— হেল্থকেয়ার করাপশন ইন ইন্ডিয়া বই’য়ের প্রকাশ অনুষ্ঠান উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনাসভায় স্বাস্থ্যক্ষেত্রে সরকারের ভূমিকা কমে যাওয়া এবং বেসরকারি লগ্নি প্রসারের প্রসঙ্গ ওঠে। সেন্ট্রাল ব্যুরো অব হেল্থ ইনটেলিজেন্স-এর সাম্প্রতিক রিপোর্ট বলছে, ভারতের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের মাত্র ১ শতাংশ স্বাস্থ্যক্ষেত্রে ব্যয় হয়, যা নেপাল, ভুটান কিংবা মালদ্বীপের মতো দেশের চেয়েও কম। এ প্রসঙ্গে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ বলেন, ‘এ দেশে প্রাথমিক স্তরের স্বাস্থ্য অবহেলিত। মেডিক্যাল কাউন্সিল অব ইন্ডিয়ার ভূমিকা, ওষুধ কোম্পানিগুলির দুর্নীতির পাশাপাশি এই বিষয়টি নিয়ে আরও আলোচনা প্রয়োজন। প্রাথমিক স্তরের স্বাস্থ্যক্ষেত্রে সরকার জিডিপি-র কতটা বিনিয়োগ করতে পারে, তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠা জরুরি। স্বাস্থ্য নিয়ে আলোচনা কম বলেই দুর্নীতির জায়গা বেশি।’ একই সঙ্গে তাঁর মত, স্বাস্থ্য পরিষেবায় বেসরকারি ভূমিকা কখনওই সরকারি ব্যবস্থার বিকল্প হতে পারে না।
দেশের সার্বিক উন্নতিতে স্বাস্থ্যক্ষেত্রে গুরুত্ব বোঝাতে গিয়ে অমর্ত্য সেন বলেন, ‘চিন প্রথমে বিমায় গুরুত্ব দিলেও পরে এক সময় তা কমিয়ে দেয়। কিন্তু পরবর্তী কালে বিভিন্ন আলোচনায় উঠে আসে স্বাস্থ্যবিমায় সরকারি বিনিয়োগের গুরুত্ব। তখন ফের বিমায় বিনিয়োগ বাড়ায় চিন। দেখা যায়, দেশের উন্নতিতেও তার প্রভাব পড়ছে।’
স্বাস্থ্য পরিষেবার গুণগত মান বৃদ্ধিতে চিকিৎসক এবং রোগীর মধ্যে আলোচনার উপরেও জোর দেন নোবেল জয়ী অর্থনীতিবাদ। স্বাস্থ্য পরিষেবার প্রাথমিক স্তরে রোগী ও চিকিৎসকের মধ্যে কথাবার্তার পরিসর ক্রমশই কমে যাচ্ছে। এটা বড় সমস্যা বলে মনে করেন প্রবীণ অর্থনীতিবিদ।
[embedyt] https://www.youtube.com/watch?v=-arCN19W_w8[/embedyt]