রেলের পর এবার বেশ কিছু রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বিলগ্নীকরণ করতে চলছে মোদী সরকার। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভার পরবর্তী বৈঠকেই এই বিষয়ে একগুচ্ছ বিল পাশ করানোর চেষ্টা হতে পারে বলে জানা গেছে।
যে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলির বিলগ্নীকরণ করা হবে বলে স্থির হয়েছে, সেগুলির মধ্যে রয়েছে ভারত পেট্রলিয়াম কর্পোরেশন লিমিটেডের সরকারের হাতে থাকা সম্পূর্ণ ৫৩ শতাংশ শেয়ার, শিপিং কর্পোরেশনের ৬৩ শতাংশ, কনকর সংস্থার ৩০ শতাংশ, নর্থ ইস্টার্ন ইলেকট্রিক পাওয়ার কর্পোরেশন লিমিটেডের ১০০ শতাংশ এবং টিএইচডিসির ৭৫ শতাংশ শেয়ার।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, আর্থিক মন্দা কাটিয়ে জিডিপি বৃদ্ধির হারকে ইতিবাচক অভিমুখে নিয়ে যাওয়ার মরিয়া চেষ্টাতেই এমন একগুচ্ছ রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বিলগ্নীকরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে মোদী সরকার। সামগ্রিকভাবে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার শেয়ার ছেড়ে দিয়ে বিলগ্নিকরণের মাধ্যমে ১ লক্ষ ৫ হাজার কোটি টাকা আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। যদিও চলতি আর্থিক বছরে এখনও পর্যন্ত ১৩ হাজার কোটি টাকাও ছাড়ায়নি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার বিলগ্নিকরণ থেকে সংগৃহীত অর্থ আদায়।
প্রসঙ্গত, ৫ শতাংশে নেমে যাওয়া জিডিপি বৃদ্ধির হারকে টেনে তুলতে মোদী সরকারের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন আগস্ট মাস থেকে লাগাতার একের পর এক ছাড় ঘোষণা করেছেন শিল্পমহলের জন্য। কিন্তু সরকার এখনও নিশ্চিত নয় যে, এই সব ব্যবস্থা নেওয়া হলেও অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াতে পারবে কি না। বিশেষ করে রিপোর্ট পাওয়া যাচ্ছে, গ্রামীণ ভারতের হাতে ক্রয়ক্ষমতা কমে গিয়েছে। তাই ভোগ্যপণ্য কেনার প্রবণতা তলানিতে। সব মিলিয়ে আর্থিক মন্দা, শিল্পে আকাল এবং কর্মসংস্থানের সঙ্কট থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর লক্ষণ এখনও দেখা যায়নি। এবার তাই সংস্কারের জন্য নতুন করে ঝাঁপাচ্ছে সরকার। টার্গেট একঝাঁক সংস্থার বিলগ্নিকরণ।
যদিও ওয়াকিবহাল মহল জানাচ্ছে, মোদী সরকারের বিলগ্নীকরণের লক্ষ্যমাত্রা বিগত কয়েক বছর ধরেই পূরণ করা যাচ্ছে না। গত আর্থিক বছরে যেখানে ৮০ হাজার কোটি টাকা আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছিল, সেখানে মার্চ মাস পর্যন্ত আয় হয় মাত্র ৪০ হাজার কোটি টাকা। শেষ বার পেশ হওয়া বাজেটে অর্থমন্ত্রী বিলগ্নিকরণের লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছেন ৯০ হাজার কোটি টাকা। গত আর্থিক বছরের ক্ষতিপূরণের জন্যই সরকার টার্গেট করেছে ১ লক্ষ ৫ হাজার কোটি টাকা। এই লক্ষ্যেই একঝাঁক রাষ্ট্রায়ত্ত্ব সংস্থা বিক্রি করা হবে। কেন্দ্রীয় সরকার আগেই ঘোষণা করেছে ২৩টি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাকে আপাতত তালিকাভুক্ত করা হয়েছে বিলগ্নিকরণের জন্য। এই তালিকায় এক দিকে যেমন রয়েছে এয়ার ইন্ডিয়া, আবার অন্য দিকে রয়েছে পবন হংস, ব্রিজ অ্যান্ড রুফের মতো সংস্থাও।