কথায় আছে, ‘যত দোষ, নন্দ ঘোষ’। মাসখানেক আগে সেই সুরই শোনা গিয়েছিল অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণের গলায়। ‘মিলেনিয়াল’ বা নবীন প্রজন্ম গাড়ি কেনার চেয়ে ওলা ও উবের ব্যবহার করতে বেশি পছন্দ করেন, এই মানসিকতাই গাড়িশিল্পে বড়সড় প্রভাব ফেলেছে বলে মন্তব্য করেছিলেন তিনি। যা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় হাসির রোল পড়ে গিয়েছিল নেটিজেনদের মধ্যে। এবার অর্থনীতিতে মন্দার দায়ভার ‘আবর্তনশীল পরিস্থিতি’র ওপর চাপালেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পীযূষ গোয়েল। তবে গোয়েল দায় যা কিছুর ওপর চাপান না কেন বা মোদী মন্ত্রিসভায় অন্যান্য সদস্যরা যে যাই বলুন, আর্থিক মন্দার কথা পক্ষান্তরে মেনেই নিলেন কেন্দ্রীয় শিল্প-বাণিজ্য মন্ত্রী।
প্রসঙ্গত, কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের অনেকেই আর্থিক মন্দাকে মানতে চাননি। মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদও সাম্প্রতিক কয়েকটি সিনেমার বক্স অফিসের সাফল্য তুলে মন্দাকে অবজ্ঞাই করেছেন। পরে অবশ্য তিনি নিজের অবস্থান পাল্টে নেন। তবে গতকাল দিল্লীতে ইন্ডিয়া এনার্জি ফোরামের এক অনুষ্ঠানে গোয়েল অবশ্য দু’টি ত্রৈমাসিকে (জানুয়ারি-মার্চ ও এপ্রিল-জুন) অর্থনীতির শ্লথগতিকে মেনে নিয়েছেন। এই দু’টি ত্রৈমাসিকে উন্নয়ন বৃদ্ধির হার কমে ৫ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। যা বিগত ছ’বছরের তুলনায় সর্বনিম্ন বলে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন।
গোয়েল বলেছেন, ‘অর্থনীতিতে এই শ্লথগতি চিরস্থায়ী নয়। ভারতের মতো বৃহৎবাজারে এভাবে মন্দা আসতেই পারে। আবার চলেও যাবে। এ নিয়ে উদ্বেগের কিছু নেই।’ পাশাপাশি সরকারের ব্যর্থতা ঢাকতে তিনি এমনও দাবি করেন যে, ‘সার্বিক পরিস্থিতির চক্রাকার পরিবর্তনের হাত ধরেই আর্থিক মন্দা ঘুরে ফিরে আসে। এটা একটা আবর্তনশীল প্রক্রিয়া। এটাই অর্থনীতির অন্যতম শর্ত।’ শুধু তাই নয়। এই শর্তের মধ্যেই যে ভারতের ভবিষ্যৎ উন্নয়নের বার্তা লুকিয়ে রয়েছে, তেমন দাবি করে লগ্নীকারীদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, ‘এটাই ভারতে লগ্নীর আদর্শ সন্ধিক্ষণ। আর্থিক উন্নয়নে ঘুরে দাঁড়ানোর মুখেই লগ্নীর সম্ভাব্য সব দিক তৈরি হয়েছে। সরকারও লগ্নিকারীদের সমস্তরকম সুযোগ সুবিধা দিতে তৈরি।’