দারিদ্রের মনস্তত্ত্ব নিয়ে গবেষণা করে সদ্য নোবেলজয়ী অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে যখন গোটা দেশ মেতেছে ঠিক তখনই এল দুঃসংবাদ। বিশ্ব ক্ষুধা সূচকে ভারতের স্থান হল ১০২ নম্বরে। প্রকাশ পেল, অন্যান্য দেশের তুলনায় ভারতে ক্ষুধার্ত মানুষের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে৷ এমনকী এই নিরিখে বাংলাদেশ, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, এমনকি নেপালের থেকেও খারাপ অবস্থা ভারতের৷
অপুষ্টি, শিশুমৃত্যু, পাঁচ বছরের চেয়ে কমবয়সি শিশুর উচ্চতার তুলনায় কম ওজনের মতো কয়েকটি মাপকাঠিতে বিভিন্ন দেশকে বিচার করে বিশ্ব ক্ষুধা সূচক। ২০১৯ সালের সেই সূচক অনুযায়ী, পাঁচ বছরের কমবয়সি শিশুর উচ্চতার তুলনায় কম ওজনের বিষয়টি সবচেয়ে বেশি প্রকট ভারত, ইয়েমেন ও জিবুতিতে। ভারতে এই ধরনের ঘটনার হার ২০.৮ শতাংশ। ক্ষুধা সূচক অনুযায়ী, চাইল্ড ওয়েস্টিং-এর এমন হার তালিকায় থাকা অন্য কোনও দেশে নেই। ভারতের জাতীয় সমীক্ষার রিপোর্টও বলছে, ভারতে চাইল্ড ওয়েস্টিং-এর হার ২১ শতাংশ।
২০১৫-১৬ সালের জাতীয় জনস্বাস্থ্য সমীক্ষার রিপোর্ট অনুযায়ী, যে সব রাজ্যে চাইল্ড ওয়েস্টিং-এর হার বেশি সেগুলির মধ্যে রয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর রাজ্য গুজরাত। এ ছাড়া ওই তালিকায় রয়েছে ঝাড়খণ্ড, মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, কর্নাটকের নাম।
তবে এ তালিকায় র্যাঙ্কিংয়ে ভারতের তুলনায় অনেকটাই এগিয়ে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা। তাদের বর্তমান র্যাঙ্কিং যথাক্রমে ৮৮ এবং ৬৬। এমনকী পাকিস্তান রয়েছে ৯৪ নম্বরে। নেপাল আছে ৭৩ নম্বরে। আর চীন আছে ২৫ নম্বরে। অর্থাৎ কেন্দ্রীয় সরকার মুখে উন্নয়নের বুলি আওড়ালেও ক্ষুধা মোকাবিলায় যে ভারত পিছিয়ে, তা পরিসংখ্যানেই স্পষ্ট।
২০১৪ সালে ক্ষুধার্ত মানুষের নিরিখে ৭৭টি দেশের ৫৫ নম্বরে ছিল ভারত৷ ২০১৬ সালে ইন্টারন্যাশনাল ফুড পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের সমীক্ষায় ক্ষুধা মোকাবিলার নিরিখে ভারতের স্থান ছিল ৯৭। পরের বছর আরও তিন ধাপ নেমে ১০০–য় পৌঁছায় দেশ। এবার জিএইচআইয়ের রিপোর্টেও ভারতের দুর্দশাই প্রকট হয়ে উঠল। কোথায় মোদীর আচ্ছে দিন? স্বাভাবিকভাবে এ প্রশ্নটা উঠছেই।