বাম সরকারের রেখে যাওয়া ঋণের বোঝা সত্বেও ক্ষমতায় এসেই রাজ্যের সাধারণ মানুষকে বিনামূল্যে চিকিৎসা ও যাবতীয় ওষুধ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যবাসীর কাছে অঙ্গীকারবদ্ধ মমতা যে ইতিমধ্যেই তাঁর কথা রেখেছেন তা জানতে আর বাকি নেই কারও। তৃণমূল জমানায় বাংলায় স্বাস্থ্য বাজেট বেড়েছে ৩ গুণ। এবার মমতার উদ্যোগে রাজ্যে হচ্ছে আরও সাতটি মেডিক্যাল কলেজ। বাড়তে চলেছে কমপক্ষে আরও ৩৫০০ শয্যা এবং সাতশো এমবিবিএস আসন। মোট খরচ ধরা হয়েছে ১৭৫০ কোটি টাকা। রবিবার স্বাস্থ্য দফতরের একাধিক পদস্থ সূত্রে এ খবর জানা গিয়েছে।
জানা গেছে, প্রতিটি নতুন মেডিক্যাল কলেজ হবে ছয় একর জমিতে। প্রতিটিতে থাকবে ৫০০টি শয্যা এবং ১০০টি এমবিবিএস আসন। নতুন সাতটি মেডিক্যাল কলেজের মধ্যে পাঁচটি ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে চালু করে দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে এগচ্ছে রাজ্য। বাকি দু’টির কাজ শুরু হবে ২০২১ সালের পর। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, প্রথম ধাপে উলুবেড়িয়া, বারাসত, আরামবাগ, তমলুক এবং ঝাড়গ্রামে পাঁচটি মেডিক্যাল কলেজ হচ্ছে। ২০২১ সালের পর জলপাইগুড়ি ও পশ্চিম বর্ধমানে বাকি দু’টি মেডিক্যাল কলেজ হওয়ার কথা। ফলে আগামী তিন বছরের মধ্যে রাজ্যে মোট মেডিক্যাল কলেজের সংখ্যা ১৮ থেকে বেড়ে হবে ২৫।
স্বাস্থ্য দপ্তরের পদস্থ সূত্রে এ-ও জানা গেছে, সেন্ট্রাল স্পনসর্ড স্কিম (সিএসএস) অনুযায়ী কেন্দ্র-রাজ্য ৬০:৪০ অনুপাতে অর্থ বিনিয়োগে গড়ে তুলবে এই কলেজগুলি। প্রতিটি কলেজের জন্য খরচ করা হবে কমবেশি ২৫০ কোটি টাকা। টাকার অঙ্ক বাড়তেও পারে বলে দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে। প্রথম ধাপে বারাসত, আরামবাগ ও তমলুকের তিনটি মেডিক্যালের যাবতীয় সরকারি অনুমোদন এসে যাওয়ায় কাজও শুরু করে দিয়েছে দপ্তর। টেন্ডার ইত্যাদি প্রক্রিয়া শেষ। পাইলিং-এর কাজও শুরু হয়ে গিয়েছে। কিন্তু, বাকি দু’টি কলেজের জমি সংক্রান্ত কিছু সমস্যা রয়েছে।
সূত্রের খবর, সিএসএস প্রকল্প অনুযায়ী কয়েক বছর আগে থেকেই জেলায় জেলায় মেডিক্যাল কলেজ গড়ার কাজ চলছে। প্রথম পর্বে ছিল ডায়মন্ডহারবার, রামপুরহাট, পুরুলিয়া, কোচবিহার এবং রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ তৈরির কাজ। সেগুলি মোটামুটি সুসম্পন্ন। দ্বিতীয় পর্বে আসছে উলুবেড়িয়া, বারাসত, আরামবাগ, তমলুক ও ঝাড়গ্রামের মেডিক্যাল কলেজের প্রকল্প। তৃতীয় পর্বে জলপাইগুড়ি ও পশ্চিম বর্ধমান বাদে জায়গা ঠিক করতে পারেনি দফতর। জানা গেছে, ডায়মন্ডহারবার, রামপুরহাট, পুরুলিয়া, কোচবিহার এবং রায়গঞ্জে এ বছর সদ্য তৈরি হওয়া পাঁচটি মেডিক্যাল কলেজের চারটির জন্যই মেডিক্যাল কাউন্সিল অব ইন্ডিয়ার অনুমোদন এসেছে। জমি হস্তান্তরের কাজ মিটলেই যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ শুরু করা হবে।