শেষ বিকেলে পাহাড়িয়া মেঘের দল ঋষি নদীর ধার ঘেঁষে নামলে তবেই সন্ধে নামে এইখানে। আর সন্ধে নামার আগে সবুজ পাহাড়েরা ঝাপসা হয়। চারদিকে পাহাড় ঘেরা এই একটুকরো নদীর চড়ায় যেন কংক্রিট ঘেরা ব্যস্ত জীবনের শত মনখারাপি নুড়ি বয়ে নিয়ে যায় খরস্রোতা নদী। বিনিময়ে দিয়ে যায় বয়ে চলার শব্দ। সে শব্দ বার বার বোঝায় ব্যর্থ হলেও এগোতে হবে। আর মাঝে মাঝে ক্লান্ত হলে ফিরে ফিরে আসতে হবে এই ঋষিখোলায়।
জায়গাটি বাংলা ও সিকিমের বর্ডার। ঋষিখোলা এখনও সেভাবে টুরিস্টস্পট হয়ে ওঠেনি। মানুষের কোলাহল সেখানে এখনো পুরোদমে পৌঁছায়নি বলেই হয়তো প্রকৃতি এখানে নিজের মতো সময় কাটাতে পারে৷ পাহাড়ে মোড়া এই ছোট্ট নদীচড়ার ঘা ঘেঁষে আশ্বিনে কাশ ফোটে। দুর্গোৎসব পালন করে ঋষিখোলা।
ঋষিখোলা ইস্ট সিকিমের একটি ভীষন ছোট গ্রাম।গ্রাম বলা ভুল হবে, ঋষি নদীর চড় আদতে, চারদিকে পাহাড় ঘেরা একটা প্লেন রিভারল্যান্ড। হাতে গোনা কয়েকটি ঘর, সেগুলোই হোম-স্টে। গাড়ি থেকে যেখানে নামানো হয়, সেখান থেকে নদী পেরোতে একটা টালমাটাল সাঁকো পেরোতে হয়। সরু রাস্তা বেয়ে এগোলে দেখা যায় হোম-স্টে গুলো।
এনজিপি থেকে প্রায় সাড়ে চার ঘন্টার পথ। জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে বৈকুন্ঠপুর ফরেস্ট পেরিয়ে কিছুটা গেলেই শুরু হয় পাহাড়িয়া পাকদন্ডী। কালিম্পং হয়ে যেতে হয় ঋষিখোলায়৷ মাঝে পেডং পরে। রাস্তা প্রথম দিকে ভালো হলেও শেষের রাস্তার মান ততটা ভালো নয়। তবে ওক পাইনের দেশে প্রকৃতি একবিন্দু নিরাশ করবে না ভ্রমনপিপাসুদের।
থাকার জায়গা বলতে কয়েকটি হাতে গোনা হোম-স্টে। প্রকৃতিপ্রেমী না হলে খুব সমস্যা। কারণ ঋষিখোলায় কিছুই নেই প্রকৃতির অপরূপ রূপ ছাড়া। একটা দোকানও অবধি নেই। হাট বসে আট কিলোমিটার উপরে, তাও সপ্তাহে একটা দিন। তবুও সব শেষে ঋষিখোলা ইজুক্যালটু একটুকরো স্নিগ্ধতায় মোড়া শান্তির জায়গা এটা বলাই যায়।