বাঙালি কবি, সমাজসেবী ও ব্রিটিশ ভারতের প্রথম মহিলা স্নাতক ডিগ্রি প্রাপ্ত মহিলা ছিলেন কামিনী রায়। অক্টোবর ১২, ১৮৬৪ সালে বাসণ্ডা, বাকেরগঞ্জ, বরিশালে জন্মগ্রহণ করেন এই বাঙালি বিপ্লবী কবি। আজ তাঁর ১৫৫ তম জন্মদিন। তাঁর জন্মদিনেই বিশেষ শ্রদ্ধা জানিয়েছে গুগল তাঁর ডুডলের মাধ্যমে।
এদেশে তিনিই প্রথম মহিলা স্নাতক। বিষয় ছিল সংস্কৃত। ওই বছরই বেথুন স্কুলে পড়ানো শুরু করলেন। পাঁচ বছর পর বেথুন কলেজেই যোগ দেন অধ্যাপনায়। মেয়েদের পড়াশোনা, স্বনির্ভর হয়ে ওঠার বিষয়ে তিনি বরাবরই ভাবতেন। এগিয়ে আনতে চেয়েছেন মেয়েদের। শুধু ভাবনাতেই আটকে রাখেননি। তা বাস্তবায়িত করার জন্য যাবতীয় প্রয়াস তিনি নিয়েছেন। তাইতো বালিকা শিক্ষার আদর্শ – অতীত ও বর্তমান ‘ এর মতো প্রবন্ধ তিনি লিখেছিলেন।
ছোট বয়স থেকেই কবিতা লেখার প্রতি তাঁর আগ্রহ ছিলই, বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে একাধিক কবিতা রচনা করেন তিনি। শুধুমাত্র স্নাতক নয় ব্রিটিশ রাজের সময় বেথুনে শিক্ষকতার চাকরিও পান তিনি। সেখান থেকেই তাঁর প্রথম বই প্রকাশ পায়। তাঁর উল্লেখযোগ্য কিছু রচনাবলি হল ‘আলো ও ছায়া’ (১৮৮৯), ‘মাল্য ও নির্মাল্য’ (১৯১৩) ইত্যাদি। কামিনী রায় তাঁর বেশ কিছু কবিতা “জনৈক বঙ্গমহিলা” ছন্দনামেও লিখেছেন বলে জানা যায়। তাঁর ভাই কলকাতার মেয়র ছিলেন ও তাঁর বোন ছিলেন একজন আইনজীবি। কামিনী রায় মূলত আট বছর বয়স থেকে কবিতা লেখা শুরু করেন।
সাহিত্যচর্চার পাশাপশি তিনি সাংস্কৃতিক ও জনহিতকর, বিশেষত নারীকল্যাণমূলক কাজেও আত্মনিয়োগ করেছিলেন বলে জানা যায়। নারীশ্রমিক তদন্ত কমিশনের অন্যতম সদস্য (১৯২২-২৩), ছিলেন কামিনী রায়। এছাড়াও বঙ্গীয় সাহিত্য সম্মেলনে সাহিত্য শাখার সভানেত্রী (১৯৩০) ও বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের সহ-সভাপতিও (১৯৩২-৩৩) ছিলেন। বাংলা সাহিত্যে অসাধারণ অবদানের জন্য তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগত্তারিণী পদক (১৯২৯)লাভ করেন। ১৯২৬ সালে ভারতে মহিলাদের ভোটদানের অধিকারের জন্য ব্রিটিশ রাজের সঙ্গেও লড়াই করেছিলেন কামিনী দেবী। আজ তাঁকেই গুগল তাঁর ডুডলের মাধ্যমে দিয়েছেন বিশেষ সম্মান।