মঙ্গলবার বেলা ১১টা নাগাদ বিজয়া দশমীর উচ্ছ্বাসের মধ্যেই জিয়াগঞ্জ শহরে লেবুবাগানে বাড়ির ভেতর থেকে ঢুকে খুন করা হয় প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক বন্ধুপ্রকাশ পাল, তাঁর সন্তানসম্ভবা স্ত্রী বিউটি মণ্ডল পাল ও তাঁদের ৬ বছরের ছেলে বন্ধুঅঙ্গন পালকে। বাড়ির শোওয়ার ঘরের খাটের উপর দেহ মেলে প্রকাশবাবুর। মেঝেতে পড়েছিল তাঁর ছেলের রক্তাক্ত দেহ। পাশের ঘর থেকে মেলে বন্ধুপ্রকাশবাবুর স্ত্রী বিউটির ক্ষতবিক্ষত দেহ।এই হত্যাকাণ্ড ঘিরে শোরগোল পড়ে যায় গোটা রাজ্যজুড়ে। বন্ধুপ্রকাশবাবু রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবকের কর্মী হওয়াতেই তাঁর পরিবারকে শেষ করে দেওয়া হল বলে বিজেপির তরফে অভিযোগ ওঠে। কিন্তু তদন্তে নেমে পুলিশ আজ স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছে এই ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগাযোগ নেই, এই খুন পারিবারিক বিবাদের জেরে।ফলে বিজেপির পক্ষে ওঠা অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন হয়ে গেল।
এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই মিলেছে কিছু তথ্য। সেই সূত্র ধরেই ঘটনার তদন্ত চালাচ্ছেন তাঁরা। বৃহস্পতিবার ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এসে পুলিশ সুপার মুকেশ বলেছেন ” এটি একটি পারিবারিক ঘটনা, এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগাযোগ নেই। ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু করেছে তদন্তকারীদের বিশেষ দল। পরিবারের সদস্য-সহ স্থানীয়দেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।”
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, জমি বিবাদের জেরেই এই মর্মান্তিক পরিণতি। খুনের নেপথ্যে পরিচিত কেউই জড়িত রয়েছে বলেই মনে করছে তদন্তকারীর বিশেষ দল। পুলিস সুপার মুকেশ জানিয়েছেন, “সমস্ত তথ্য প্রমাণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ” পাশাপাশি স্যোশাল মিডিয়ায় ভুয়ো খবর না ছড়ানোর অনুরোধ করেছেন পরিবার-সহ পুলিশ সুপারও।
এসপি শ্রী মুকেশ বলেন, “খুনের কারণ এখনও স্পষ্ট নয়। তবে কতগুলি সম্ভাবনা খতিয়ে দেখছি আমরা। আততায়ীদের যাঁরা সে দিন ছুটে পালাতে দেখেছিলেন এ রকম বেশ কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলেছি। খুনের পরে যে পারিপার্শ্বিক সাক্ষ্যপ্রমাণ মিলেছে তার থেকে দেখা গেছে নিহত তিনজন আততায়ীদের বিরুদ্ধে কোনও বাধাই তৈরি করতে পারেননি. এর থেকে আমাদের মনে হচ্ছে তাঁরা পূর্ব পরিচিত। এবং মাদক খাইয়ে আগেই পরিবারের তিনজনকে নেশাগ্রস্ত করে ফেলেছিল তারা।” তাই একথা স্পষ্ট হয়ে গেল বিজেপির অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যে।