ফের আরও একবার কুসংস্কারের বলি হল একটি ১০ বছরের শিশু। জানা গেছে, অসুখ করায় ছেলেকে এক তান্ত্রিকের কাছে নিয়ে গিয়েছিলেন তাঁর বাবা মা। রোগ সারানোর নাম করে সেই শিশুকেই খুন করলেন সেই তান্ত্রিক। খুন করার চেষ্টা করা হয় আরও এক শিশুকে। কিন্তু তার আগেই পুলিশের জালে ধরা পড়লেন সেই মহিলা তান্ত্রিক।
ঘটনাটি ঘটেছে নদিয়া জেলার নাকাশিপাড়া থানার কাঁঠালবেড়িয়া গ্রামে। পুলিশ সূত্রে খবর, নাংলা গ্রামের বাসিন্দা হলধর শেখ ও আফরিনা বিবি গত ২২ সেপ্টেম্বর তাঁদের ১০ বছরের ছেলে জান নবি শেখকে নিয়ে নাকাশিপাড়া গ্রামের তান্ত্রিক আলপনা বিবির কাছে যান। বেশ কিছুদিন ধরেই নবি অসুখে ভুগছিল। অসুখ করেছিল ছোট ছেলে ৬ বছরের জাহাঙ্গির শেখেরও। দু’জনকেই তাঁর কাছে রেখে যেতে বলেন আলপনা।
পুলিশ জানিয়েছে, ২৫ সেপ্টেম্বর ফের আলপনার কাছে যান আফরিনা। সেখানে গিয়ে তিনি দেখেন তাঁর দুই ছেলেরই পিঠে দগদগে ঘা। ছেলেদের জিজ্ঞাসা করলে তারা জানায় পিঠে গরম তেল, ঘি ও লঙ্কা গুঁড়ো দিয়েছিলেন আলপনা। তাতেই এই অবস্থা। তখনই ছেলেদের নিয়ে যেতে চান তিনি। কিন্তু আলপনা জানান, নিয়ে যেতে হলে তাঁকে ১০ হাজার ৫০০ টাকা দিতে হবে।
জানা গিয়েছে, এ কথা শোনার পরই বাড়ি এসে টাকার জোগাড় করেন আফরিনা। তারপর শুক্রবার টাকা নিয়ে সেখান থেকে ছেলেদের নিয়ে আসতে যান আফরিনা। গিয়ে দেখেন নবির দেহে কোনও সাড় নেই। ছোট ছেলে জাহাঙ্গিরও কাতরাচ্ছে। সেইসময় আফরিনার হাতে নাকি ৪ হাজার টাকা গুঁজে দিয়ে এ কথা কাউকে বলতে নিষেধ করেন আলপনা।
দুই ছেলেকে সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে নিয়ে যান আফরিনা ও হলধর। সেখানেই ডাক্তাররা জানান নবির মৃত্যু হয়েছে। জাহাঙ্গিরকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সেখানে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছে সে। এরপরেই পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন তাঁরা। শুক্রবার আলপনা বিবিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ আনা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে জেরার মুখে নিজের অপরাধের কথা স্বীকার করেছেন আলপনা।