গতবছর বাংলার লোকশিল্পকে পুজোর থিম হিসেবে বেছে নিয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছিল দক্ষিণ কলকাতার অভিজাত মুদিয়ালি ক্লাব। গোটা মণ্ডপ জুড়ে ফুটিয়ে তোলা হয়েছিল বাংলার পটচিত্রকে। তার সঙ্গে ছিল ডোকরার অসাধারন কাজ। যা দর্শনার্থীদের নজর কেড়েছিল। গতবারের মতো এবারও এক নতুন চিন্তাভাবনা নিয়ে আসতে চলেছে ৮৫ তম
বর্ষে পা দেওয়া মুদিয়ালির পুজো। উৎসব মানেই আনন্দ, আর আনন্দ মানেই নানা রঙের সমাহার। এ নিয়েই মুদিয়ালির এবারের থিম। যাতে একদিকে যেমন থাকছে উৎসবের ছোঁয়া। তেমনি মন্ডপ জুড়ে থাকবে ২০ লক্ষ কাচের চুড়ি আর নানা রঙের সমাহারও। যার রূপদান করছেন রাষ্ট্রপতি পুরষ্কার প্রাপ্ত শিল্পী গৌরাঙ্গ কুইল্যা। যিনি গতবারও এ পুজোর দায়িত্ব সামলেছেন। এর পাশাপাশি বরাবরের মতোই নজর কাড়বে বেনারসি শাড়িতে একেবারে সাবিকিয়ানায় মোড়া দেবী প্রতিমাও।
মুদিয়ালি ক্লাবের সদস্য শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় এখন খবরকে বলেন, “এবার ৮৫তম বর্ষে আমাদের থিম হল ‘সাজিয়ে পুজোর ডালি রঙের হাটে মুদিয়ালি’। মুদিয়ালির পুজোর একটা নিজস্ব ধারা আছে। এখানে যেমন বারব্রত অঞ্জলি হয়, তেমনি ভোগদান উৎসবেও আমরা সবাই মিলে সামিল হই। এই ধারাকেই আমরা এত বছর ধরে বহন করে এসেছি। সেই ধারাকেই আমরা এখনও বজায় রেখেছি। যার ফলে এখন মুদিয়ালির পুজোটা আর কোনও বারোয়ারি পুজো নয়, এটা যেন একটা বাড়ির পুজোয় পরিণত হয়েছে। পুজোর দিনগুলিতে গোটা পাড়াটাই একটা পরিবার হয়ে যায়। এই পাড়াতে বিভিন্ন ধরণের লোকজনেরা আছেন, বিভিন্ন সম্প্রদায়ের লোকজনেরা আছেন, সবাই একসঙ্গে একটা পরিবারের মতো আমরা এই পুজোটা করি।”
থিম সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি জানান, ‘দর্শনার্থীরা যখন মণ্ডপে ঢুকবেন, দেখবেন অসংখ্য সুন্দর কারুকার্য আর আলোকধারায় বর্ণময় এক জীবন, যা সকলকেই প্রচন্ড আনন্দ দেবে। সকলেই এই পুজো দেখে মনে খুশির আনন্দ বয়ে নিয়ে যাবেন। সমগ্র ভাবনা ও সৃজনের দায়িত্বে রয়েছেন শিল্পী গৌরাঙ্গ কুইল্যা। তাঁরই পরিচালনায় একটি অনিন্দ্য সুন্দর মণ্ডপ, এবং সেই সঙ্গে মুদিয়ালির সেই অতিপরিচিত রাজকীয় বসন পরা
সাবেকি প্রতিমা গড়ছেন চন্দননগরের শিল্পী অসিত পাল। আলোকসজ্জার দায়িত্বে রয়েছেন দীনেশ পোদ্দার। আমাদের আনুমানিক বাজেট প্রায় ৫৫ লাখ।’ শান্তনুবাবু এ-ও জানান, আগামী ৩০ তারিখ মুদিয়ালির পুজো উদ্বোধন করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যা তাঁদের পুজোর একটি অন্যতম বড় চমক। পুজোয় নানা রঙের বাহার দেখতে যে এবারও মুদিয়ালির পুজোয় ভিড় জমাবেন মানুষ, তা এখন থেকেই বলে দেওয়া যায়।