গোটা দেশ জুড়ে মোদী-লহর উঠলেও, সপ্তদশ লোকসভা নির্বাচনে লাল দূর্গ কেরলে সেভাবে ফুটতেই পারেনি ‘পদ্ম’। আর সেই প্রসঙ্গ নিয়েই এক সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তরে অভিনেতা জন আব্রাহাম যা বললেন তা তোলপাড় ফেলে দিয়েছে। ‘ম্যাড্রাস ক্যাফে’ থেকে ‘বাটলা হাউজ’, বলিউডে অনেক হিট ছবিই করে ফেলেছেন জন আব্রাহাম। তার মধ্যে বেশিরভাগই দেশপ্রেমের। কিন্তু রাজনীতির আঙিনায় কখনও পা রাখেননি তিনি। এমনকী রাজনৈতিক কোনও ইস্যু নিয়েও সেভাবে মুখ খোলেননি। কিন্তু এবার তিনি যা বললেন, তাতে থ নেটিজেনরা। সত্যিকারের বামপন্থীদের রাজ্য কেরালা। সেই কারণেই সেখানে এখনও মোদী-লহর ওঠেনি। ‘মোদী-ফায়েড’ হওয়ার কোনও প্রয়োজনও অনুভব করেননি কেরালাবাসী। এমনই মন্তব্য করেছেন অভিনেতা।
ম্যাড্রাস ক্যাফে হোক বা পরমাণু, সত্যমেব জয়তে হোক বা বাটলা হাউজ– দেশাত্মবোধক সিনেমার মুখ হিসেবে রুপোলি পর্দায় বারবারই আত্মপ্রকাশ করেছেন জন। কিন্তু তাঁর ব্যক্তিগত দেশপ্রেম যে কোনও নির্দিষ্ট দলের রাজনৈতিক বক্তব্যের উপরে নির্মিত নয়, তা এ দিনই প্রথম জানা গেল জনের নিজের মুখ থেকে। তাঁর কথায়, ‘এটাই কেরালার সৌন্দর্য। এখানে আপনি দেখতে পাবেন, ১০ মিটারের মধ্যে মন্দির, মসজিদ, গির্জা– সবই রয়েছে এবং শান্তিপূর্ণ ভাবে রয়েছে। ধর্মবিশ্বাস নিয়ে কারও সঙ্গে কারও কোনও ঝামেলা নেই। সারা দেশে যখন ধর্মীয় মেরুকরণ চলছে, ধর্মকে ভিত্তি করে অসহিষ্ণুতা বাড়ছে, তখন কেরালা সমস্ত ধর্ম ও সম্প্রদায়ের মানুষ একসঙ্গে শান্তিতে বসবাস করছেন। সেক্যুলারিজম এখানে পূর্ণ মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত।’
নিজের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে জন আরও বলেন, ‘আমার মনে আছে, যখন ফিদেল কাস্ত্রো মারা গিয়েছিলেন, তখন আমি কেরালা গিয়েছিলাম। সেখানে দেখেছিলাম, সারা রাজ্যে তাঁর ছবি, হোর্ডিং টানিয়ে শোক জ্ঞাপন করা হয়েছিল। অন্য কোনও রাজ্যে এ রকম হয়েছে বলে শুনিনি। কারণ কেরালার মানুষ সত্যিই কমিউনিস্ট। কমিউনিজমকে শ্রদ্ধা করেন তাঁরা। আমিও তাই। আমার বাবা আমাকে ছোট থেকেই কার্ল মার্ক্সর প্রচুর বই পড়তে দিতেন। আমি সাম্যবাদে বিশ্বাস করি। অর্থের সমবণ্টনে বিশ্বাস করি। কেরালা হল সাম্যবাদেরই সুস্পষ্ট উদাহরণ।’ আগে কখনও রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে এভাবে মুখ খোলেননি তিনি। তাই এবার তাঁর মুখ খোলায়, অবাক অনেকেই। ইতিমধ্যেই নেটিজেনদের কাছে চর্চার বিষয় হয়ে উঠেছে এটি।