মোদী সরকারের দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুতেই কেন্দ্রীয় নীতির জেরে দেশের অর্থনীতিতে গভীর মন্দা ও নীতি-পঙ্গুত্ব দেখা দিয়েছে। শিল্পে খরা। নগদ টাকার জোগান নেই। টানা পাঁচ ত্রৈমাসিকে মুখ থুবড়ে পড়েছে ভারতীয় অর্থনীতির বৃদ্ধি (জিডিপি)। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয়, এর পরেও অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন বলছেন, নগদের অভাব কোথাও নেই। বাজারে কেনাকাটা হচ্ছে। প্রত্যন্ত এলাকায় চাহিদা যথেষ্ট। ব্যাঙ্কগুলিও দরাজ হাতে ঋণ দিচ্ছে। হ্যাঁ, গতকাল বেসরকারি ব্যাঙ্ক ও অন্যান্য ঋণদাতা সংস্থার সঙ্গে বৈঠকের পরে এমনটাই দাবি করেন অর্থমন্ত্রী।
গতকাল নির্মলা দাবি করেন, ব্যাঙ্কের কর্তারাই তাঁকে এসব জানিয়েছেন। এমনকী কেউ নাকি চাহিদার অভাব রয়েছে বলেননি। তার পরেই তাঁর আশ্বাস, অতএব চলতি অর্থবর্ষের দ্বিতীয়ার্ধেই উজ্জ্বল হবে অর্থনীতির ছবি। নির্মলার কথায়, ‘বৈঠক টনিকের মতো কাজ করেছে। ইতিবাচক কথা শুনেছি। একজনও বলেননি কোথাও কোনও উদ্বেগের কারণ আছে।’ যা শুনে তাজ্জব বনে যাচ্ছেন বিরোধীরা। অনেকেরই প্রশ্ন, এপ্রিল-জুন ত্রৈমাসিকে বৃদ্ধি যখন ৫ শতাংশ হয়ে ছ’বছরের তলানি ছুঁয়েছে, অর্থনীতির ঝিমুনি নিয়ে যখন শিল্প থেকে অর্থনীতিবিদ সবাই উদ্বিগ্ন, তখন অর্থমন্ত্রী এমন দাবি করলেন কী ভাবে? কেউ বললেও, তা বিশ্বাস করার কারণই বা কী?
প্রসঙ্গত, বিক্রি নাগাড়ে কমায় বহু গাড়ি সংস্থা সাময়িক উৎপাদন বন্ধ রাখছে। বৃহস্পতিবারই অশোক লেল্যান্ড বলেছে সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মিলিয়ে পাঁচ দিন চেন্নাই কারখানায় কাজ হবে না। টাটা মোটরসের জাগুয়ার ল্যান্ড রোভারও নভেম্বরে ব্রিটেনের কারখানায় এক সপ্তাহ উৎপাদন বন্ধ রাখবে জানিয়েছে। কিন্তু নির্মলার দাবি, বেসরকারি ব্যাঙ্কের কর্তারা তাঁকে বলেছেন, বাণিজ্যিক গাড়ি বিক্রির কমা একেবারেই ব্যবসার ওঠাপড়া। এমন হয়ে থাকে। ২০১০ সালেও হয়েছিল। ৩-৬ মাসের মধ্যেই তা বাড়তে শুরু করবে। এর আগে যাত্রীবাহী গাড়ি প্রসঙ্গে নির্মলা বলেছিলেন, নতুন প্রজন্ম ওলা-উবেরে বেশি চড়ে বলে বিক্রি কমছে। আর এবার তিনি বললেন, এ জন্য দায়ী ক্রেতাদের মনোভাব।