এবার নিজেদের দেউলিয়া ঘোষণা করে দিল বিশ্বের অন্যতম বঅড় ট্র্যাভেল এজেন্সি থমাস কুক৷ গত কয়েক বছর ধরেই অর্থনৈতিক সংকট জাঁকিয়ে বসেছিল। সংস্থার তরফে তাই চেষ্টা চালানো হয়েছিল বেসরকারি লগ্নিকারীদের থেকে ঋণ জোগাড়ের৷ কিন্তু শেষরক্ষা হল না৷ ফলে ভেঙেই পড়ল ১৭৮ বছরের প্রাচীন আর ঐতিহ্যবাহী থমাস কুক৷ এই ঘটনায় যেমন বিশ্বজুড়ে ওই সংস্থায় কর্মরত ২২ হাজার কর্মচারীর কাজ গিয়েছে, তেমনি দুনিয়া জুড়ে দুর্ভোগে পড়েছেন ৬ লক্ষ পর্যটক। তাঁরা এখন কীভাবে ঘরে ফিরবেন বুঝে উঠতে পারছেন না। আগেই নিজেদের বিমান পরিষেবার ঝাপ বন্ধ করে দিয়েছিল থমাস কুক। এবার গোটা সংস্থাটাতেই জ্বলে গেল লালবাতি।
থমাস কুকের বন্ধ হয়ে যাওয়াকে শুধু অর্থনীতির দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দেখতে চাইছেন না বহু পর্যটক। তাঁদের মতে, এই সংস্থা উঠে যাওয়া মানে বিশ্ব পর্যটনের দেড় শতকের ঐতিহ্যে আঘাত। ১৮৪১ সালে পথ চলা শুরু। ব্রিটেনের বিভিন্ন শহর ট্রেনে করে ঘুরিয়ে দেখানো দিয়ে শুরু হয়েছিল থমাস কুকের পথ চলা। তারপর ১৭৮ বছর ধরে সারা বিশ্বের পর্যটকদের অন্যতম ভরসার ব্র্যান্ড হয়ে উঠেছিল এই ব্রিটিশ সংস্থা। কিন্তু এই মুহূর্তে সংস্থার পুনরুজ্জীবনের জন্য প্রয়োজন ছিল আড়াই কোটি মার্কিন ডলার। ভারতীয় মুদ্রায় সাড়ে সতেরশো কোটি টাকা। ব্যক্তিগত পুঁজিপতিদের বিনিয়োগেরও চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু তা শেষমেশ দানা বাঁধেনি। শুধুমাত্র ব্রিটেনেই থমাস কুকের ৬০০ স্টোর ছিল।
থমাস কুক এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘অনেক চেষ্টা, আলোচনার পরেও প্রয়োজনীয় অর্থ জোগাড় করা গেল না৷ তাই এই মুহূর্তেই সংস্থা বন্ধ করা ছাড়া আর উপায় নেই৷ বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় আটকে থাকা কয়েক লক্ষ পর্যটককে ঘরে ফেরানোর জন্য সরকার ও ব্রিটিশ সিভিল অ্যাভিয়েশন অথরিটি কয়েক ডজন চার্টার্ড বিমানের ব্যবস্থা করছে আটকে থাকা পর্যটকদের ঘরে ফেরানোর জন্য৷ এর জন্য কোনও টাকা লাগবে না৷’ উল্লেখ্য, ব্রিটেন থেকে এই মুহূর্তে দেড় লক্ষ পর্যটক থমাস কুকের প্যাকেজে বিদেশে ছুটি কাটাতে গিয়েছেন৷ এ প্রসঙ্গে থমাস কুকের সিইও পিটার ফ্যাঙ্কহাউসারের কথায়, ‘খুবই দুঃখের দিন৷ আমি এবং বোর্ডের সব সদস্য এই ব্যর্থতার দায় নিচ্ছি৷ আমরা ব্যর্থ৷’