ঢাকে কাঠি পড়তে আর বেশি বাকি নেই। মা দুর্গার আগমন বার্তায় চারি দিকে সাজো সাজো রব। তুঙ্গে শহর কলকাতার ছোট-বড় সকল পুজোর প্রস্তুতিই। বাদ নেই উত্তর কলকাতার অন্যতম নামকরা পুজো টালা বারোয়ারিও। আজ থেকে ১৫ বছর আগে পরিবর্তনের নেশায় সাবেক থেকে থিমে রূপান্তর। সেই ধারা মেনে প্রতিবারের মতো এবারও এক নতুন ও অভিনব ভাবনা নিয়ে সেরা থিম পুজোর দৌড়ে সামিল তারা। এ বছর ৯৯ তম বর্ষে পদার্পণ করল এই পুজো। তাই বয়সের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই এবার শুরু থেকেই টালা বারোয়ারি প্রচার করে এসেছে যে, এবার তারা ‘সোনায় মোড়া ৯৯’-এর গল্প শোনাবে। তাদের এবারের থিম গোল্ডেন গ্রাস। সমগ্র ভাবনা ও রূপায়নে শিল্পী সঞ্জীব সাহা।
এখন খবরকে শিল্পী সঞ্জীব সাহা বলেন, ‘এবারে আমাদের থিম গোল্ডেন গ্রাস। এই ঘাসটি হয় মূলত আফ্রিকা এবং ব্রাজিলের আমাজনে। এছাড়া ভারতের বিহার ও উড়িষ্যাতেও এর দেখা মেলে। সোনালি রঙের কারণেই ঘাসটির নাম গোল্ডেন গ্রাস। তবে ভারতের বিভিন্ন জায়গায় একে বিভিন্ন নামে ডাকা হয়। যেমন উড়িষ্যায় বলা হয় কাইচা, আবার বিহারে বলা হয় সিকি ঘাস। এই ঘাস দিয়ে উড়িষ্যায় টিবেল ম্যাটের মতো বিভিন্ন ইউটিলিটি প্রোডাক্ট এবং বিহারে ডেকোরেশনের সামগ্রী তৈরি হয়। এই ঘাসের ওপরেই এবার আমাদের গোটা মণ্ডপটি সাজানো হচ্ছে। এছাড়াও ব্যবহার করা হচ্ছে বাঁশ, খড়, দড়ি ইত্যাদি।
শিল্পী জানিয়েছেন, মণ্ডপসজ্জায় ব্যবহৃত এই সোনালি ঘাস আনানো হচ্ছে মূলত বিহার ও উড়িষ্যা থেকে। প্রায় তিন মাস ধরে এখানে কাজও করছেন এই দুই রাজ্যের শিল্পীরা।
সোনালি ঘাসের বিভিন্ন পর্যায়ের প্রতিচ্ছবি ফুটিয়ে তোলা হবে গোটা মণ্ডপজুড়ে। যা কলকাতায় আগে কখনো হয়নি। তবে থিমে চমম থাকলেও, নিরানব্বইতম বর্ষে এখনও সাবেক টালার বারোয়ারির প্রতিমা। মন্ডপের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই সাবেকি প্রতিমা সাজিয়ে তুলছেন কুমোরটুলির শিল্পী সৌমেন পাল। প্রতি বছরই পুজোর দিনে বাংলার দূরদূরান্ত থেকে মানুষ আসেন টালা বারোয়ারির মণ্ডপ দর্শনে। এবার ‘সোনার মোড়া’ মন্ডপ দেখতে সেই ভিড় আরও বাড়বে বলেই দাবি পুজো উদ্যোক্তাদের।