কয়েক সপ্তাহ আগেই উয়েফার বর্ষসেরা অনুষ্ঠানে একদম সামনের সারিতে লিওনেল মেসি ও ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোকে পাশাপাশি বসতে দেখে চমকে গিয়েছিল ফুটবলবিশ্ব। গত ১৫ বছর ধরে তাঁরা নিজেদের খেলার মাধ্যমে আনন্দ দিয়ে আসছেন ফুটবল ভক্তদের। তাই প্রতিটি মুহূর্তে দাঁড়িপাল্লায় ফেলে মাপা হয় দুই মহাতারকার স্কিল। তাঁদের ভক্তদের মধ্যে নিরন্তর চলতে থাকে ঝগড়া। কে সবচেয়ে সেরা? তা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় উত্তপ্ত মত-বিনিময় চলে অবিরত।
সেদিন মঞ্চের সামনের সারিতে বসে রোনাল্ডো বলেছিলেন, ‘‘আমরা ১৫ বছর ধরে এই মঞ্চ ভাগ করে নিচ্ছি। আমরা দু’জন ছাড়া আর কেউ নেই এত বছরে। আমাদের সম্পর্ক দারুণ। যদিও আমরা কোনও দিন এক সঙ্গে ডিনারে যাইনি, কিন্তু সেটা করতে ভবিষ্যতে দেখা যেতেই পারে।’’পাশে বসে থাকা মেসি সেই কথা শুনে শুধুমাত্র মুচকি হেসেছিলেন। আর প্রেক্ষাগৃহে বসে থাকা অসংখ্য মানুষ একসঙ্গে হাততালি দিয়েছিলেন।
এ হেন রোনাল্ডো সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘‘উয়েফার অনুষ্ঠানে আমাদের (মেসি ও রোনাল্ডো) কথা বলতে দেখে অনেকেই অবাক হয়ে গিয়েছিলেন। তবে আমরা দু’জন মোটেও বন্ধু নই। আমরা শুধুমাত্র গত ১৫ বছর ধরে বিশ্বসেরার মঞ্চ শেয়ার করছি।’’ তবে মেসিকে এখনও এই বিষয়ে কোথাও মুখ খুলতে দেখা যায়নি।
মেসি ও রোনাল্ডোর শো কেসে শোভা পাচ্ছে পাঁচ-পাঁচটি করে ব্যালন ডি’ অর। পর্তুগিজ মহাতারকা অবশ্য মনে করছেন, ব্যালন ডি’ অর জেতার ক্ষেত্রে তিনি ছাপিয়ে যাবেন মেসিকে। সাক্ষাৎকারের একটি প্রশ্নের জবাবে রোনাল্ডো বলেন, ‘‘মেসি মানুষ হিসেবে খুব ভাল। দারুণ প্লেয়ার। আমি ওকে শ্রদ্ধা করি। তবে মেসির থেকে বেশি ব্যালন ডি’অর জিততে চাই আমি।’’ এতেই বোঝা যায় দুই তারকার মধ্যে লড়াইটা ঠিক কোন জায়গায়।
স্পেন ছেড়ে রোনাল্ডো এখন চলে গেছেন ইটালিতে। রিয়াল মাদ্রিদের সেই চিরাচরিত সাদা জার্সি সরিয়ে গায়ে চাপিয়েছেন জুভেন্তাসের সাদা-কালো জার্সি। কিন্তু, রিয়াল মাদ্রিদের জার্সি চাপিয়ে খেলার অভিজ্ঞতা এখনও ভুলতে পারেন না তিনি। স্পেনের মাঠে বার্সা বনাম মাদ্রিদের লড়াইয়ের থেকেও উপভোগ্য হয়ে উঠেছিল দুই সুপারস্টারের একে অপরকে ছাপিয়ে যাওয়ার যুদ্ধ। রোনাল্ডো বলেছিলেন, “একে অপরকে ছাপিয়ে যাওয়ার যুদ্ধ আমাদের দু’জনের খেলারই উন্নতি ঘটিয়েছে। মেসি ভাল খেললে আমিও উন্নতির চেষ্টা করেছি, আমি ভাল খেললে লিও সেই চেষ্টা করেছে।’’ ফলে এই সুস্থ প্রতিযোগিতা দু’জনকেই শ্রেষ্ঠত্বের দিকে এগিয়ে দিয়েছে।