৩৭০ ধারা বাতিলের কয়েক সপ্তাহ পর থেকেই কেন্দ্রীয় সরকার দাবি করে আসছে যে, জম্মু ও কাশ্মীরের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে। কিন্তু এতদিন ধরে করে আসা কেন্দ্রের এই দাবি একেবারে ফুৎকারে উড়িয়ে দিল সিপিএম। শুধু তাই নয়, উপত্যকার সাম্প্রতিক পরিস্থিতির কারণে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হওয়ারও পরিকল্পনা করছেন বামেরা। সাংবাদিক সম্মেলন থেকে এমনটাই জানিয়েছেন কাশ্মীরের সিপিএম নেতা ইউসুফ তারিগামির এবং দলের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি।
এদিনের সাংবাদিক সম্মেলনে ইয়েচুরি বলেন, জম্মু ও কাশ্মীর ভেঙে দু’টি পৃথক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল তৈরি করা এবং ওই অঞ্চলের বর্তমান পরিস্থিতির সঙ্গে জড়িত বিবিধ বিষয় জানিয়ে শীর্ষ আদালতে রিট আবেদন জমা দিতে চলেছে সিপিএম। অক্টোবর মাসের প্রথম সপ্তাহে সুপ্রিম কোর্টে এই আবেদনের শুনানি হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।
এদিন ইয়েচুরি বলেন, ‘ওখানে আসল সমস্যা হল কর্মসংস্থানের অভাব। চল্লিশ দিনের বেশি সময় ধরে মানুষ প্রতিদিন আয় করতে ব্যর্থ হচ্ছে। দ্বিতীয়ত, সরকারি পরিবহণের অভাবে যাঁরা কর্মরত, তাঁদেরও রোজগারে টান ধরেছে।’ ইয়েচুরির দাবি, ‘সরকার যা দাবি করছে, বাস্তব পরিস্থিতি তার একেবারে উল্টো। মানুষ মনে করছেন, রাজ্য ভেঙে দু’টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল তৈরি করে আদতে তাঁদের অপমান করা হয়েছে।’
এদিকে সম্মেলন থেকে ইউসুফ তারিগামি বলেন, ‘কাশ্মীরে এর আগেও কঠিন দিন আমরা দেখেছি। মৃত্যু, যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করার মতো ঘটনা অতীতেও দেখেছি। কিন্তু বর্তমানে বোধহয় সবচেয়ে অন্ধকারাচ্ছন্ন সময় এসেছে। যখন দেখি, রক্ষকের দ্বারাই কাশ্মীরবাসীর সঙ্গে ভারতের ঐক্যের ভিত আক্রান্ত হচ্ছে, তখন স্তম্ভিত হই।’
প্রসঙ্গত, ৩৭০ ধারা তুলে দেওয়ার পরে রাহুল গান্ধী, সীতারাম ইয়েচুরি, শরদ পাওয়ার সহ দেশের বেশ কিছু বিরোধী দলনেতা জম্মু ও কাশ্মীরে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু শ্রীনগর বিমানবন্দরেই তাঁদের আটকে দেওয়া হয়। ফলত তাঁরা কেউই আর কাশ্মীরে প্রবেশ করতে পারেননি। পরে সুপ্রিম কোর্টে তিনি পিটিশন দাখিল করায় তাঁকে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়। এই অনুমতি পাওয়ায় এবং চিকিৎসার জন্য অসুস্থ বাম নেতা তারিগামিকে দিল্লির এইমস-এ ভর্তি হওয়ার ছাড়পত্র দেওয়ার জন্য এদিন সুপ্রিম কোর্ট এবং প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈকে ধন্যবাদ জানান ইয়েচুরি।