মোদী জমানায় সর্বত্রই চলছে গৈরিকিকরণের পালা। এবার যার আঁচ পড়তে চলেছে দেশের গণতন্ত্রের মন্দিরে। হ্যাঁ, এবার সংসদ ভবনের ঠিকানা বদলে দিতে চলেছে মোদী সরকার। কেন্দ্রের সাফাই, রাইসিনা হিলসের আগে বিজয় চকের ডান দিকে সগরিমায় দাঁড়িয়ে যে সংসদ ভবন, তার বয়স এতদিনে নব্বই পেরিয়ে গিয়েছে। এডউইন লুটিয়েন ও হার্বাট বেকার নামে দুই স্থপতির তৈরি এই ভবনে ইদানীং সবার স্থান সংকুলান হয় না। দিল্লীতে কেন্দ্রীয় সরকারের সচিবালয়গুলিরও অনেক বয়স হয়েছে। স্থানের অভাব সেখানেও। তাই ভাবনাচিন্তা ছিল অনেক দিন ধরে। এবার তাই নতুন করে সে সব বানানোর সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে সরকার।
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালে দেশের স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্ণ হবে। সরকারের শীর্ষ সূত্রে বলা হচ্ছে, তার আগেই তৈরি হয়ে যাবে নতুন সংসদ ভবন। সেই সঙ্গে বিজয় চক থেকে ইন্ডিয়া গেট পর্যন্ত যে সেন্ট্রাল ভিস্টা-তার চালচিত্রও বদলে ফেলা হবে। সরকারি সচিবালয়ের সমস্ত মন্ত্রক ও অফিস নিয়ে আসা হবে এক ছাদের তলায়। নতুন সংসদ ভবন ও কেন্দ্রীয় সচিবালয় মিলিয়ে এমন এক সেন্ট্রাল ভিস্টা তৈরি হবে যার ঐতিহ্য আগামী দেড়শ-দু’শ বছর পর্যন্ত থেকে যাবে। এজন্য আন্তর্জাতিক স্তরে স্থপতি ও বিশেষজ্ঞ সংস্থার সঙ্গে সরকার ইতিমধ্যেই আলোচনা শুরু করে দিয়েছে বলে খবর।
তবে প্রশ্ন উঠছে, বর্তমান সংসদ ভবন কি পুরোপুরি বাতিল হয়ে যাবে? এর সদুত্তর এখনও সরকারের থেকে পাওয়া যায়নি। বলা হচ্ছে, পুরনো সংসদ ভবন চত্বরের সংস্কার করে সেখানেই নতুন ভবন গড়ে তোলা হতে পারে। বা অন্য কোনও জায়গায় নতুন করে সংসদ ভবন তৈরি করা হতে পারে। এমনিতে নয়াদিল্লীতে জায়গার অভাব নেই। মাস্টার প্ল্যান গ্রিন এরিয়া যেমন রয়েছে, তেমনই আরাবল্লীর পাথুরে জায়গাও রয়েছে। তবে নতুন করে জায়গা অধিগ্রহণ করলে যে সবুজ ধ্বংস নিয়ে একটা বিতর্ক তৈরি হতে পারে তা বলাই বাহুল্য। এমনিতেও দেশের ঐতিহ্যবাহী সংসদ ভবন বদলে ফেলার সিদ্ধান্তে মোদী সরকারকে জোর সমালোচনার মুখে পড়তে হচ্ছে।