বিজেপির অন্দরে বেশ কয়েকদিন ধরেই দেখা যাচ্ছে এক যাত্রাপালা। এক পাশে শোভন চট্টোপাধ্যায় ও বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়, অন্যদিকে, বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ- এই দু’পক্ষের মধ্যে চলছে দড়ি টানাটানির খেলা। একে অপরকে দোষারোপের পালা। তবে অপমান সহ্য করে যে আর বিজেপি করতে চান না তাঁরা, এবার সে কথাই স্পষ্ট করে দিলেন শোভন-বৈশাখী। শুক্রবার বিজেপির অরবিন্দ মেনন ও দিলীপ ঘোষকে ফোন করে বৈশাখী জানিয়েছেন, ‘আমাদের বিরুদ্ধে কুৎসা আর কতদিন চলবে? আমাদেরও মান-সম্মান আছে। তাই বিজেপি করার প্রশ্ন নেই।’
শুধু তাই নয়। বৈশাখী এ-ও বলেন যে, ‘বিজেপিতে রেখে আমাদের অপমান করা হচ্ছে। অনেক আগেই আমরা নিষ্কৃতি চেয়েছি। আমি কখনও রাজনীতি করিনি। শিক্ষা জগতের সঙ্গেই যুক্ত। শোভন দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতি করেছেন। জনপ্রতিনিধি হিসেবে তিনি যথেষ্ট ভাল কাজ করেছেন। রাজনীতিতে তাঁর একটা জায়গা রয়েছে। তাঁর সম্পর্কে বিজেপির জয়প্রকাশ মজুমদার উল্টোপাল্টা কথা বলবেন, সেটা আমরা মেনে নেব না। তিনি এমন কেউ নন যে তাঁর বক্তব্যের বিরুদ্ধে শোভনকে পাল্টা বলতে হবে।’
প্রসঙ্গত, গত ১৪ আগষ্ট দিল্লীতে বিজেপির সদর দফতরে গিয়ে দলে যোগ দেন শোভন-বৈশাখী। আর তারপর থেকেই শুরু হয় যাবতীয় বিতর্ক। দেখা যায়, দলে যোগ দেওয়ার পরেও শোভনকে কোনও কাজ দেওয়া হয়নি রাজ্য বিজেপির তরফে। বেহালাতেও তিনি কোনও দায়িত্ব পাননি। বরং দলের অন্দরেই কুৎসার মুখে পড়তে হচ্ছে তাঁকে। যার অর্থ, এখনও তাঁকে দলের বাইরের কেউই মনে করছেন রাজ্য নেতৃত্ব। এ নিয়ে বৈশাখী বলেন, ‘আমরা যখন নিষ্কৃতি চেয়েছিলাম, তখন দেওয়া হল না। বিজেপি–তে রেখেই আমাদের অপমান করা শুরু হল। আমাকে নিয়ে কুৎসা করা হচ্ছে। দুঃসহ পরিবেশ। এর শেষ হওয়া দরকার।’
অরবিন্দ মেনন ও দিলীপকে বৈশাখী জানান, ‘বিজেপিতে শৃঙ্খলা আনা উচিত। প্রতিদিন হোয়াটস অ্যাপ ও বিভিন্ন পোর্টালে আমাদের কথা লেখা হচ্ছে। খারাপ দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে আমাদের দুজনকে। এটা আমি পছন্দ করছি না। আমরা তো কোনও অন্যায় করিনি। কারও বিরুদ্ধেও বলিনি। আমাদের যখন আক্রমণ করা হচ্ছে, সেই সময় আমাদের পাল্টা বলতে হচ্ছে। প্রতিবাদ করা তো দূরের কথা, বিজেপির কয়েকজন নেতা পরিকল্পনা করে আমাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করছেন। এটা মানব না। দল না করলে কিছু যাবে-আসবে না। আমার হারানোর কিছু নেই, পাওয়ারও কিছু নেই। সম্মানটাই বড়।’ তাঁর সাফ কথা, ‘আমাদের অবস্থান থেকে আমরা আর সরে আসতে পারব না।’