৫ অগস্ট ৩৭০ ধারা বাতিলের কথা ঘোষণা করা হয়েছিল। প্রায় তখন থেকেই বন্ধ ইন্টারনেট পরিষেবাও। তার পর কেটে গিয়েছে এক মাসেরও বেশি। বিশ্বায়নের যুগে যেখানে ইন্টারনেট ছাড়া এক মুহূর্তও জীবন চলে না। তাও যোগাযোগ বলতে ল্যান্ডলাইন পরিষেবা, তা-ও সর্বত্র চালু হয়নি। আর ইন্টারনেট? কল্পনা করা যায় না, সেখানে পুরো উপত্যকা এক মাসেরও কাটিয়ে ফেলল এ ভাবেই যা কি না ভূস্বর্গের ইতিহাসে দীর্ঘতম। আদানপ্রদান, ব্যবসাবাণিজ্য সবটাই প্রায় শিকেয়। ফল স্বরূপ বিভিন্ন স্তরের মানুষের নিদারুণ আর্থিক ক্ষতি, পেশাগত বিপর্যয়।
এর আগে ২০১৬ সালে জঙ্গি কম্যান্ডার বুরহান ওয়ানির মৃত্যুর পর যে তুমুল আলোড়ন শুরু হয়েছিল, সে সময় টানা ২০০ ঘণ্টা ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ ছিল কাশ্মীরে। কিন্তু এ বারের নিষেধাজ্ঞা সব রেকর্ড ছাপিয়ে গিয়েছে।
এ পর্যন্ত প্রায় ৮০০ ঘণ্টা নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে রয়েছে ‘অন্তর্জাল।’ এবং তাতে মূলত ক্ষতি ব্যবসায়ীদের। যেমন শাহিদ মহম্মদ। অনলাইনে কাশ্মীরি নকশা করা পোশাক বিক্রি করেন তিনি। চেপে রাখতে পারলেন না খেদের কথা। ‘এই ইন্টারনেটে নিষেধাজ্ঞার জেরে ব্যবসা লাটে উঠেছে। এখন তো মনে হচ্ছে অনলাইনে ব্যবসা করার মতো উপযুক্ত নয় কাশ্মীর কারণ এখানে যে কোনও মুহূর্তে ইন্টারনেটে নিষেধাজ্ঞা জারি হতে পারে।’
শুধু ব্যবসায়ীকূল নয়, ইন্টারনেট নিষেধাজ্ঞায় সাংবাদিককূলও আতান্তরে। প্রত্যন্ত জায়গা থেকে রাজধানী শহরে সংবাদপত্রের মূল দপ্তরে খবর পাঠাতে তাঁদের ভরসা ইন্টারনেটই। কিন্তু এখন তা অতীব দুঃসাধ্য হয়ে পড়েছে। অন্য দিকে, ছাত্রছাত্রীদের লেখাপড়াও ক্ষতিগ্রস্ত। কাশ্মীরের বাসিন্দাদের একাংশ অবশ্য এই হেনস্থা সত্ত্বেও ভরসা রাখছেন সরকারের উপর। তাঁরা মনে করেন, ৩৭০ ধারা বাতিল হতোই। এখন তাঁদের আশা, সমানাধিকার দেওয়া হবে তাঁদের।