শিক্ষক দিবসের অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে তাঁদের বদলি নীতি শিথিল করার নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘শিক্ষকদের বদলির বিষয়টা মানবিক দিক থেকে দেখুন। যে শিক্ষকদের বাড়ি মেদিনীপুরে, অথচ শিক্ষকতা করেন বাঁকুড়ায়, তাঁর অসুবিধে হয়। যদি তাঁকে নিজের জেলায় আনা যায় সেটা দেখতে হবে’।
বৃহস্পতিবার নেতাজি ইন্ডোরে শিক্ষক দিবসের অনুষ্ঠানের শুরুতে রাধাকৃষ্ণণের মূর্তিতে মাল্যদান করেন মুখ্যমন্ত্রী। মূল অনুষ্ঠানের শুরুতেই শিক্ষকদের সম্মাননা প্রদান করেন তিনি। শিক্ষাক্ষেত্রে বিগত আট বছরে ঠিক কী কী উন্নতি হয়েছে, সেই খতিয়ান তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী। বিরোধীদের কটাক্ষের সুরে রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘স্বাধীনতার পর থেকে ৭০ বছরে ১২টি বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি হয়েছিল। তবে ৮ বছরে রাজ্যে ৪২টি বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করেছি আমরা’।
শিক্ষক দিবসের মঞ্চ থেকেই কেন্দ্রকে একহাত নেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ‘সমস্ত প্রতিকূলতা পেরিয়ে রাজ্যের শিক্ষকদের কথা মাথায় রেখে একাধিক পরিষেবার বন্দোবস্ত করা হয়েছে’ জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘কোনও রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের পেনশন, গ্র্যাচুইটি দেওয়া হয় না। কিন্তু আমরাই একমাত্র পেনশন, গ্র্যাচুইটি দিচ্ছি। অবসরের পর যাতে শিক্ষকদের কোনও অসুবিধা না হয় তাই ই-পেনশনও চালু করেছি আমরা। ১৩ লক্ষ শিক্ষক-শিক্ষিকাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছি। তাঁদের উচ্চশিক্ষার জন্য সবেতন ছুটির বন্দোবস্ত করেছি। শিক্ষকরা আগে কবে বেতন পাবেন, তা জানতেন না। কিন্তু আমাদের সরকার শিক্ষকদের মাসের ১ তারিখে বেতন পাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। স্বাস্থ্যসাথীর অন্তর্ভুক্ত করেছি শিক্ষকদের। মাতৃত্বকালীন এবং পিতৃত্বকালীন ছুটির বন্দোবস্তও করেছি আমরা’।
রাজ্যের একাধিক উন্নয়নমূলক প্রকল্প তুলে ধরার পাশাপাশি কেন্দ্র সরকার একহাত নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘কেন্দ্রের হাতে রিজার্ভ ব্যঙ্ক আছে। যখন খুশি টাকা তুলে নিচ্ছে। আর আমাদের থেকে বিপুল পরিমাণ সুদ নেওয়া হচ্ছে’। তবে সব শেষে তাঁর একটাই বক্তব্য, ‘যতদিন ক্ষমতায় থাকব, ততদিন সাধারণ মানুষের জন্যই কাজ করে যাব’।