ভারতীয় ক্রিকেটের অন্দরে বেশ কিছুদিন ধরেই টালমাটাল চলছে। কোচ ও কোচিং স্টাফদের রদ বদল নিয়ে চলছে টানাপোড়েন। কোচ হিসেবে রবি শাস্ত্রীকে রেখে দিলেও কোচিং স্টাফদের মধ্যে বদল এনেছে জাতীয় নির্বাচকমণ্ডলী। ব্যাটিং কোচ সঞ্জয় বাঙ্গারের পরিবর্তে আনা হয়েছে বিক্রম রাঠোরকে। আর সেটা মন থেকে কোনওভাবেই মেনে নিতে পারেননি শান্ত স্বভাবের বাঙ্গার। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর চলাকালীন তিনি জাতীয় নির্বাচকমণ্ডলীর এক সদস্যের হোটেলের রুমে গিয়ে বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন বলে খবর।
বাঙ্গারের বক্তব্য ছিল, “ভারতীয় দলের সাফল্য ও ব্যর্থতার দায় পুরো কোচিং স্টাফের। কেন শুধু তাঁকে বলির পাঁঠা করা হচ্ছে। দল যদি ব্যর্থ হয়, তাহলে সবাইকে বরখাস্ত করা উচিত ছিল। কিন্তু বেছে বেছে শুধু আমাকেই টার্গেট করা হয়েছে।”
প্রশ্ন হচ্ছে, বাঙ্গার কেন হঠাৎ করে নির্বাচকের সঙ্গে ঝামেলায় জড়ালেন? ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদের মতে, হেড কোচ হিসাবে রবি শাস্ত্রীকে বেছে নিয়েছিলেন কপিল দেবের নেতৃত্বাধীন ক্রিকেট পরামর্শদাতা কমিটি। কিন্তু বোলিং কোচ, ব্যাটিং কোচ কিংবা ফিল্ডিং কোচ নির্বাচনের দায়িত্ব কপিল দেবদের দেওয়া হয়নি। যা নিয়েও বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। রবি শাস্ত্রীর সহকারীদের বেছে নেওয়ার জন্য সিওএ দায়িত্ব দেয় নির্বাচক কমিটিকে। আর তাই মনে করা হচ্ছে, বাঙ্গার জাতীয় নির্বাচকমণ্ডলীর কার্যকারিতা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
তবে বাঙ্গারের এই আচরণে বেজায় ক্ষুব্ধ সিওএ। ভারতীয় দলের ম্যানেজার সুনীল সুব্রহ্মণ্যম ও হেড কোচ রবি শাস্ত্রী যদি বাঙ্গারের বিরুদ্ধে বিসিসিআইয়ের কাছে কোনও রিপোর্ট জমা দেন, তাহলে প্রাক্তন ব্যাটিং কোচকে ডেকে কৈফিয়ত চাওয়া হতে পারে। তবে বিসিসিআইয়ের এক কর্তা জানিয়েছেন, ‘বাঙ্গার এখন প্রাক্তন কোচ। বিসিসিআইয়ের সঙ্গে কোনওভাবে চুক্তিবদ্ধ নয়। তাই এই ঘটনা যদি ঘটেও থাকে, তাহলে বাঙ্গারের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া কঠিন। তাছাড়া নিয়ম মেনে সব কিছু করতে হবে। যে নির্বাচকের সঙ্গে বাঙ্গার খারাপ আচরণ করেছে বলে শোনা যাচ্ছে, তিনি কি এখনও পর্যন্ত কোনও অভিযোগ বোর্ডের কাছে করেছেন? তাই সবার আগে ওই নির্বাচককে অভিযোগ জানাতে হবে।’
তবে যে জাতীয় নির্বাচকের সঙ্গে এই ঘটনাটি ঘটেছে, তাঁর কাজকর্ম নিয়ে খুশি নয় অনেকেই। পুর্বাঞ্চলের ওই জাতীয় নির্বাচকের বিরুদ্ধে ক্ষোভ রয়েছে বাংলার প্রাক্তন অধিনায়কেরও। এর আগে ঋষভ পন্থকে বিশ্বকাপ দলে না রাখা নিয়েও জাতীয় নির্বাচকদের যোগ্যতা নিয়ে অনেক প্রাক্তন ক্রিকেটার প্রশ্ন তুলেছিলেন। তবে বাঙ্গারের সঙ্গে জাতীয় নির্বাচকের বাগবিতণ্ডার ঘটনা এত সহজে থামবে বলে হচ্ছে না।