কেন্দ্র যে বরাবর বাংলা কে বঞ্চনা করে আসে এমন অভিযোগে বারংবার সরব হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার ফের কেন্দ্রের দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরব হলেন মমতা। ১০০ দিনের কাজের বকেয়া টাকা দিচ্ছে না কেন্দ্র এমন অভিযোগই আনলেন তিনি।
গতকাল বিধানসভায় প্রশ্নোত্তর পর্বে এই প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “১০০ দিনের কাজের যে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল, তা অনুমোদন করছে না কেন্দ্রীয় সরকার। শ্রমদিবস তৈরিতে পশ্চিমবঙ্গ যেহেতু প্রথম স্থানে রয়েছে, সেই হিসেবে আমাদের লক্ষ্যমাত্রা অন্য রাজ্যের তুলনায় বেশি ছিল। এরাজ্যে ১০০ দিনের কাজে যুক্ত পরিবারের সংখ্যাও অনেক বেশি। কিন্তু আমরা বর্তমান আর্থিক বছরের জন্য যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দিল্লিতে পাঠিয়েছি, তা কেন্দ্রীয় সরকার অনুমোদন করছে না”।
মমতার অভিযোগ, বরাদ্দ আটকে থাকছে তিন থেকে ছ’মাস। তার মধ্যেও রাজ্যের বিভিন্ন দফতরের কাজ একযোগে করা হচ্ছে। বিশেষত পঞ্চায়েত, সেচ, বন, মৎস্য আর জনস্বাস্থ্যের কাজ হচ্ছে একসঙ্গে। মুখ্যমন্ত্রী জানান, এ বার স্কুলে স্কুলে মিড-ডে মিলের কাজেও ১০০ দিনের প্রকল্প থেকে লোক দেওয়ার চিন্তাভাবনা চলছে পঞ্চায়েত দফতরে। স্কুলে খাবার জোগানোর প্রকল্পের পাশাপাশি বিভিন্ন কবরস্থানের রক্ষণাবেক্ষণের জন্যও ১০০ দিনের কাজ প্রকল্প থেকে লোকজন দেওয়ার দাবি উঠেছে বিধানসভায়। সেই প্রসঙ্গেও ভাবনাচিন্তা করা হচ্ছে বলে জানানো হয়।
তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক দেবেশ মণ্ডল এ দিন পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের কাছে জানতে চান, ১০০ দিনের প্রকল্পে পুকুর কাটার কাজ বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে কি না?উত্তর দিতে গিয়ে সুব্রতবাবু বলেন, ১০০ দিনের কাজে নতুন পুকুর খননে কোনও নিষেধাজ্ঞা নেই। বরং এই কাজটিকে অগ্রাধিকারের মধ্যেই রাখা হয়েছে। তবে এই প্রকল্পে সরকারি বা পঞ্চায়েতের আওতায় থাকা পুকুর খনন করা হয়ে থাকে, ব্যক্তিগত পুকুর নয়। এরপরই মন্ত্রী বেশ কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার পরই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বিভিন্ন দপ্তরে যে সরকারি প্রকল্পগুলি রয়েছে, সেগুলিকে ১০০ দিনের প্রকল্পের আওতায় আনার প্রচেষ্টা চলছে। অসুবিধা দূর করতে একাধিক দপ্তরকে এক ছাতার তলায় এনে কাজ করছি। ১০০ দিনের কাজের সঙ্গে যাঁরা যুক্ত, তাঁদের জন্য আমরা কাজের জায়গা বাড়ানোর চেষ্টায় রয়েছি। আমরা রাজ্যের তরফে বারবার কেন্দ্রীয় সরকারকে আমাদের বকেয়া টাকা চেয়ে এবং অন্যান্য দাবি জানিয়ে চিঠি লিখেছি। কিন্তু কেন্দ্র যা যা শর্ত দিচ্ছে, তাতে উল্টে ১০০ দিনের কাজের ক্ষেত্র কমে যাচ্ছে।