গঙ্গার নীচ দিয়ে মেট্রো যাবে। দেশের যাতায়াত ব্যবস্থা আরও উন্নত হবে। এমনই ভাবনা ছিল মেট্রো কর্তৃপক্ষের। সুড়ঙ্গ কাটার কাজের সফলতা নিয়ে কলকাতা মেট্রো রেল কর্পোরেশন লিমিটেডের হয়ে ঢাক ঢোল পিটিয়ে প্রচার করেছিল রেলমন্ত্রক। কিন্তু সেই সুড়ঙ্গ খোঁড়ার কাজেই বউবাজারে এই মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটায় রেল মন্ত্রক এবং বোর্ড কর্তারা হতবাক। এমনকি মন্ত্রকের ঘনিষ্ঠ মহলের খবর, রেলমন্ত্রীও বিষয়টি নিয়ে যথেষ্ট ক্ষুণ্ণ। সেটা ইতিমধ্যেই বোর্ড কর্তাদের বুঝিয়ে দিয়েছেন তিনি। তিনি বলেছেন, বোর্ড কর্তাদের এই বিষয়ে অবিলম্বে হস্তক্ষেপ করতে হবে।
রেল সূত্রের খবর, একদিকে রেলমন্ত্রীর নির্দেশ, অন্যদিকে চারদিকে সমালোচনার ঝড় দেখে শেষ পর্যন্ত বোর্ড কর্তারাও এ বার হস্তক্ষেপ করেছেন। বুধবারই কেএমআরসিএলের কাছে নির্দেশ দিয়ে তাঁরা বলেছেন, দুর্ঘটনার ব্যাপারে এক সপ্তাহের মধ্যে বিষদ তথ্য দিল্লীতে জানাতে হবে। কেন এই ঘটনা ঘটল, দিতে হবে তার ব্যাখ্যাও। কেএমআরসিএলের দেওয়া ওই সব যুক্তি বোর্ড কর্তাদের সন্তুষ্ট করতে না পারলে, প্রয়োজনে প্রকল্পের কাজে যুক্ত প্রত্যেক কর্তা-কর্মীকে দিল্লিতে ডেকে পাঠানো হতে পারে। সেখানেই তাঁদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলবেন বোর্ড কর্তারা।
বুধবারও বউবাজারের দুর্গাপিতুরি পাড়া লেনে একটি বাড়ি হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ে। পাশাপাশি ওই এলাকার স্যাকরা পাড়া এবং হিদারাম ব্যানার্জি লেনে অনেকগুলি বাড়িতে নতুন করে বড় বড় ফাটল ধরেছে। ফলে বউবাজারে ওই তিনটি মহল্লায় এখন চূড়ান্ত দুর্দশাগ্রস্ত অবস্থা স্থানীয়দের। সবাই প্রাণ ভয়ে বাড়ি ছাড়তে শুরু করেছেন। কার্যত গোটা এলাকা এখন ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে। দফায় দফায় মেট্রোর কর্তারা ঘটনাস্থল পরিদশর্ন করলেও, ঘটনা যে তাঁদের হাত থেকে আগেই বেরিয়ে গিয়েছে সেটা স্পষ্ট।
রেলেরই এক পক্ষের বক্তব্য, প্রথম থেকেই সংস্থার কাজকর্ম চলছে কার্যত জোড়া তাপ্পি দিয়ে। সুড়ঙ্গ তো পরে, মাটির উপরে থাকা উড়ালপুলের লাইনেও এখনও বিস্তর কাজ বাকি। সেক্টর-৫ থেকে শিয়ালদহ পর্যন্ত কবে ট্রেন চলানো যাবে সেটাও কেউ ঠিকভাবে বলতে পারছেন না। এমনকি বার বার ঘোষণা করেও সেক্টর-৫ থেকে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন পর্যন্ত সামান্য দূরত্বে তাঁরা আজও ট্রেন চালাতে পারেননি। ফলে আসন্ন পুজোর আগে ওইটুকু দূরত্বেও ট্রেন চালানো যাবে কি না, সেটা নিয়েও ধোঁয়াশায় রয়েছে মেট্রো কর্তৃপক্ষ।