এনআরসি চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের পর গতকালই সরব হয়েছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ খুলেই তিনি বলেছিলেন, হাজার হাজার প্রকৃত ভারতীয়দের নাম এই তালিকা থেকে বাদ পড়েছে। তার মধ্যে অনেক সিআরপিএফ ও সেনাবাহিনীর অন্যান্য জওয়ানরা রয়েছেন। এক লাখের ওপর গোর্খার নাম বাদ পড়েছে। এমনকী বাদ পড়েছে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ফকরুদ্দিন আলি আহমেদের পরিবারের সদস্যদের নামও। তাই সরকারের উচিত যে সমস্ত প্রকৃত ভারতীয়রা এই তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন, তাঁদের দিকে লক্ষ্য রাখা। এনআরসি ইস্যুতে এবার মমতার সুরেই আসরে রাষ্ট্রসংঘ! রাষ্ট্রসংঘের উদ্বাস্তু বিভাগের শীর্ষ আধিকারিক ফিলিপো গ্রান্ডি এই ইস্যুতে মোদী সরকারকে একপ্রকার সতর্কবার্তা দিয়েছেন। এ বিষয়টি নিশ্চিত করতে বলছেন যে, কোনও ভাবেই যাতে কোনও নাগরিক রাষ্ট্রহীন না হয়ে পড়ে।
রবিবার ভারতের এনআরসিতে ১৯ লক্ষ মানুষের বাদ পড়া নিয়ে উদ্বেগপ্রকাশ করে জেনিভা থেকেই একটি বিবৃতি জারি করেন ফিলিপো গ্রান্ডি। তাতে বলা হয়েছে, ‘যে কোনও প্রক্রিয়া, যাতে অনেক মানুষ রাষ্ট্রহীন হয়ে যেতে পারে সেই প্রক্রিয়াই, রাষ্ট্রসংঘের বিশ্বকে উদ্বাস্তশূন্য করার প্রচেষ্টা ব্যর্থ করবে।’ গ্র্যান্ডি বলছেন, মোদী সরকারের উচিত এটা নিশ্চিত করা যে কোনও নাগরিকই রাষ্ট্রহীন না হয়ে যায়। সেই সঙ্গে তাঁর আরও দাবি, ‘প্রত্যেক নাগরিকের তথ্যের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। তাদের উপযুক্ত আইনি পরিষেবা দিতে হবে। সরকারকে আইনি সহায়তা করতে হবে। নিশ্চিত করতে হবে, এঁরা সর্বোচ্চ শ্রেণির পরিষেবা পাচ্ছে।’ আসলে, গোটা বিশ্বেই উদ্বাস্তু সমস্যা মেটাতে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে রাষ্ট্রসংঘ। সম্প্রতি মায়ানমারের রোহিঙ্গা বিতড়নের ফলে দক্ষিণ এশিয়ায় নতুন করে উদ্বাস্তু সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। তাই রাষ্ট্রসংঘের উদ্বাস্তু পরিষদ নিশ্চিত করতে চাইছে, যারা ভারতের এনআরসি থেকে বাদ পড়ছেন, তাঁরা যেন রাষ্ট্রহীন না হয়ে যান।