সাড়ম্বরে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। তারপর কেটেছে মাত্র ২ সপ্তাহই। কিন্তু এর মধ্যেই গেরুয়া শিবিরের প্রতি বিতৃষ্ণা জমে গেছে শোভন চট্টোপাধ্যায় ও বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তাঁরা বলছেন, এই পরিবেশে কাজ করা অসম্ভব, ‘নিষ্কৃতি’ চাই। প্রয়োজনে পদত্যাগত্যাগপত্র পাঠাতেও প্রস্তুত তারা।
জানা গেছে, বিজেপির অন্যতম সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা বঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়র সঙ্গে দেখা করে শোভনরা ‘নিষ্কৃতি’ চেয়েছেন। প্রয়োজনে আনুষ্ঠানিক ভাবে ইস্তফা দিতেও প্রস্তুত— বিজয়বর্গীয়কে শোভন এ কথাও জানিয়েছেন।
বিজেপিতে তাঁদের যোগদানের দিন অর্থাৎ ১৪ অগস্ট থেকে ঘটনাপ্রবাহ যে পথে এগিয়েছে, তাতে নিজেদের অসম্মানই দেখছেন শোভন-বৈশাখী। যোগ দেওয়ার পর বঙ্গ বিজেপি দফতরে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বৈশাখীর বাদ পড়া থেকে রায়দীঘির তৃণমূল বিধায়ক দেবশ্রী রায়কে বিজেপিতে যোগ দেওয়া না দেওয়ার চৰ্চা – জল যেদিকে গড়াচ্ছে তাতে শোভন মোটেই সন্তুষ্ট নন।
বৃহস্পতিবার রাত ১০টার পরে কৈলাস বিজয়বর্গীয়র দক্ষিণ কলকাতার আবাসে ডাক পড়েছিল শোভন চট্টোপাধ্যায় ও বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তার আগের রাতেই শোভনের বাড়ি গিয়ে বৈঠক করেছিলেন দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তরফ থেকে বঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী পর্যবেক্ষক অরবিন্দ মেনন। সঙ্গে ছিলেন জয়প্রকাশ মজুমদারও। মেননের সঙ্গে শোভন-বৈশাখীর সম্পর্ক বেশ ভাল হলেও জয়প্রকাশের নানা ভূমিকা সম্পর্কে তাঁরা দু’জনেই সন্দিহান। বুধবার রাতে শোভনের বাড়িতে হওয়া বৈঠকে জয়প্রকাশ রীতিমতো তোপের মুখে পড়েন বলেও বিজেপি সূত্রের খবর। তবে প্ৰাক্তন মেয়রের ঘনিষ্ঠ মহল জানাচ্ছে, এই টানাপড়েন শোভন আর জিইয়ে রাখতে চান না। তাই বৃহস্পতিবার রাতে বিজয়বর্গীয়কে শোভন অনুরোধ করেছেন, তাঁকে ও বৈশাখীকে দল থেকে নিষ্কৃতি দেওয়া হোক।
শনিবার সংবাদমাধ্যমে বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘আমাদের নিষ্কৃতি দেওয়া হোক৷ প্রয়োজনে পদত্যাগ পাঠাতে পারি৷ বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বকে বিষয়টি জানিয়েছি৷ বারংবার অসত্য কথা বলা হচ্ছে৷ ভাবমূর্তি নষ্ট করা হচ্ছে৷ পুরনো চটিতেই যদি পুরনো দলের চটিতেই পা গলাতে চাই, তাহলে তো পুরানো দলেই থাকা যেত৷ শোভন চট্টোপাধ্যায়ও দল ছাড়তে চান’৷ এই প্রসঙ্গে শোভন চট্টোপাধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে মুখ না খুললেও একটি সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘হ্যাঁ আমি নিষ্কৃতি চেয়েছি। অমর্যাদা বা অসম্মানের সঙ্গে আপস করব না বলেই তো তৃণমূল ছেড়েছিলাম। এখন আবার যদি একই পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়, তা হলে সরে দাঁড়ানোই ভাল’।