কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা বাতিলের আগে উপত্যকায় সেনা মোতায়েন করা হয়েছিল। তবে শুধু সেনা এবং প্রশাসনিক ক্ষমতার ওপর ভরসা করে বসে থাকেনি মোদী সরকার। রীতিমতো ধুমধাম করে পুজোও দিয়েছিল কেন্দ্র। করা হয়েছিল হোম-যজ্ঞ। সম্প্রতি প্রকাশ্যে এসেছে তথ্য।
গত ৫ আগস্ট জম্মু-কাশ্মীরে সংবিধানের ৩৭০ ধারা রদ করা হয়েছিল। সেই সিদ্ধান্ত ঘোষণার আগে ম্যাঙ্গালুরুর মুকাম্বিকা মন্দিরে পুজোর আয়োজন করা হয়েছিল মোদী সরকারের তরফে। কোল্লুরের মুকাম্বিকা মন্দিরের পুরোহিত কে এন সুব্রমণিয়া আদিগা বলেন, ‘অর্থ মন্ত্রকের এক আধিকারিক আমাদের ফোনে জানান, ৫ অগস্ট তাঁদের দেশ ও দেশবাসীর মঙ্গলকামনায় পুজোর আয়োজন করতে হবে। পরে সেই পুজোর প্রসাদ তুলে দিতে হবে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমনের হাতে। আমরা সেদিন চণ্ডিকা হোম করেছিলাম প্রায় আড়াই ঘন্টা ধরে। হোম শেষে মহাপুজোর আয়োজন করা হয়। হঠাত্ এমন অনুরোধ কেন, প্রথমটায় বুঝতে না পারলেও, পরে সরকারি ঘোষণা শুনে বুঝলাম ৩৭০ ধারা খারিজ করার আগে ঈশ্বরের আশীর্বাদ নিতে চেয়েছিল কেন্দ্র সরকার।’
পুজোর ঠিক দু’দিন পরে কে এন সুব্রমণিয়া আদিগা, তাঁর বাবা এবং মন্দিরের প্রধান পুরোহিত কে এন নরসিংহ আদিগা এবং আরও এক পুরোহিত কে এন পরমেশ্বর আদিগা প্রসাদ নিয়ে দিল্লী পাড়ি দেন। ৭ অগস্ট অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের হাতে তুলে দেওয়া হয় প্রসাদ। ৮ অগস্ট প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে সকাল ৮টা নাগাদ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন তাঁরা। প্রায় ১৫ মিনিট তাঁদের সঙ্গে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। দেশের মানুষের জন্যে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করার অনুরোধও করেন।
তবে পুজো-যজ্ঞের পরেও পুরোপুরি চিন্তামুক্ত হতে পারেনি মোদী সরকার। কারণ ধারা বিলোপের বিরোধিতা করে বেশ কয়েকটি জনস্বার্থ মামলা গৃহীত হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। এই মামলাগুলি পাঁচ বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে পাঠানো হয়েছে, যার শুনানি হবে আগামী অক্টোবরে। এই মামলায় ইতিমধ্যেই মোদী সরকারকে নোটিস পাঠিয়েছে দেশের শীর্ষ আদালত।