প্রথম টেস্টের মতই দ্বিতীয় টেস্টেও টসে হেরে গেল ভারত। গতকাল টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক জেসন হোল্ডার৷ সাবাইনা পার্কে ঘাসের পিচে ব্যাটিং শুরু হয় কোহলিদের। তবে যতটা প্রত্যাশা ছিল তা পূর্ণ হল কই! গতকাল আবার ব্যর্থ হলেন পূজারা। পন্থ, বিহারী এবং মায়াঙ্কের ব্যাটিং বাঁচিয়ে রাখল ভারতকে।
প্রাথমিক বিপর্যয় সামলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বিশেষ অসুবিধা হয়নি টিম ইন্ডিয়ার। বিপর্যয় রোধ করে দলকে শক্ত ভিতে বসিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেন ক্যাপ্টেন কোহলি। তাঁকে যথাযোগ্য সঙ্গত করেন নবাগত ওপেনার মায়াঙ্ক আগরওয়াল। যদিও সুযোগ থাকা সত্ত্বেও ব্যক্তিগত ইনিংসকে দু’জনের কেউই তিন অঙ্কে টেনে নিয়ে যেতে পারেননি। শেষের দিকে ঋষভ পন্তকে সঙ্গে নিয়ে হনুমা বিহারী যথাসাধ্য লড়াই চালান। ফলে জামাইকা টেস্টের প্রথম দিনে আপাতত বিপন্মুক্ত টিম ইন্ডিয়া।
জামাইকা টেস্টে শুরুটা ভালো করেও জ্যাসন হোল্ডারের বাউন্সারে পরাস্ত হয়ে লোকেশ স্লিপে কর্নওয়ালের হাতে ধরা পড়েন ব্যক্তিগত ১৩ রানে। তবে মায়াঙ্ক আগরওয়াল অ্যান্টিগা টেস্টের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে প্রথম থেকেই শট চয়নের ক্ষেত্রে যথেষ্ট সতর্ক ছিলেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বোলাররা সাবাইনা পার্কের সবুজ ও বাউন্স ভরা পিচের সুবিধা কাজে লাগিয়ে প্রারম্ভিক পর্বে ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের যথেষ্ট বেগ দিয়েছেন। তবে বাউন্সারে বেশ কয়েকবার পরাস্ত হলেও মায়াঙ্ক কিন্তু উইকেট বাঁচিয়ে রাখতে সফল হন। আর সেই কারণেই ভারত ম্যাচে ফিরে আসার সুযোগ পায়।
প্রচণ্ড গরম ও আর্দ্রতার কারণে ক্যারিবিয়ান বোলাররা লম্বা স্পেল করতে পারছিলেন না। তার সুযোগ নিয়ে ইনিংস দীর্ঘায়িত করার চেষ্টা করেন মায়াঙ্ক। কিন্তু চেতেশ্বর পূজারা নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি। প্রথম টেস্টেও তিনি ব্যর্থ হয়েছিলেন। অনেকেই আশা করেছিলেন, দ্বিতীয় টেস্টে চেনা ছন্দে পাওয়া যাবে চেতেশ্বরকে। কিন্তু ওয়েস্ট ইন্ডিজের দীর্ঘদেহী স্পিনার রাখিম কর্নওয়ালের বলে ব্রুকসের হাতে সহজ ক্যাচ দিয়ে মাঠ ছাড়েন পূজারা। ২৫ বল খেলে তাঁর সংগ্রহ মাত্র ৬ রান।
লক্ষ্যে অবিচল ছিলেন কোহলি। ঠান্ডা মাথায় ক্যারিবিয়ান বোলিংয়ের মোকাবিলা করেন তিনি। দলকে এগিয়ে নিয়ে যান রাহানেকে সঙ্গী করে। ১১২ বলে তিনি হাফসেঞ্চুরি করেন। তাঁর ইনিংসে ছিল সাতটি চার। অ্যান্টিগা টেস্টের নায়ক অজিঙ্ক রাহানে এ দিনও শুরু থেকে ছিলেন সতর্ক। বিশেষ করে, রানিং বিটুইন দ্য উইকেটসে কোহলি-রাহানে জুটি চাপ বাড়িয়ে দেন ক্যারিবিয়ান বোলারদের। এখন দেখার পন্থ নিজের সুযোগ কাজে লাগিয়ে, শনিবার বড় রানের ইনিংস খেলে দলকে ভরসা যোগাতে পারেন কিনা। অন্যদিকে হনুমা বিহারীর লক্ষ্য থাকবে জীবনের প্রথম আন্তর্জাতিক শতরানটা ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জেই করে নেওয়ার।
গতকাল শুরুতে অবশ্য কোহলিকে বেশ নড়বড়ে দেখাচ্ছিল। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে টি-২০ এবং ওয়ান ডে সিরিজে অনবদ্য ব্যাটিং করেছিলেন বিরাট। প্রথম টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে তিনি হাফ-সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছিলেন। ক্যারিবিয়ান সফরকে স্মরণীয় করে রাখতে এই ম্যাচেও বড় ইনিংসকেই পাখির চোখ করেছেন কোহলি।