এনআরএস হাসপাতালে ডাক্তার নিগ্রহের কান্ডে তোলপাড় হয়েছিল রাজ্য। তারপরই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ডাক্তারদের স্বার্থে বেশ কিছু আইন এনেছিলেন। কিন্তু তাতেও হুঁশ ফেরেনি সাধারণ মানুষের। এবার ফের সরকারি হাসপাতালে রোগীর আত্মীয়দের হাতে কর্তব্যরত চিকিৎসক নিগ্রহের অভিযোগ উঠল। যদিও অভিযোগ পাওয়ার পরই ২ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালের এই ঘটনায় ফের নিন্দার ঝড় বয়েছে চিকিৎসক মহলে।
শুক্রবার সকাল ১১টা নাগাদ হাসপাতালের বহিবির্ভাগে রোগী দেখার সময় তাপস সরকার নামে এক সার্জেনকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। তাঁকে সাহায্য করতে এগিয়ে গেলে হাসপাতালের কয়েকজন কর্মীকেও নিগ্রহ করা হয়। হাসপাতালের নিরাপত্তরক্ষীরা মহারাজা শেখ ও সাহিন শেখ নামে দুজনকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছেন।
জানা গিয়েছে, শুক্রবার সকাল ১১টা নাগাদ কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালের বহিবির্ভাগে ভিড় ছিল। সার্জিক্যাল বিভাগে রোগী দেখছিলেন চিকিৎসক তাপস সরকার। তার পাশেই বহিবির্ভাগে রোগী দেখানোর জন্য টিকিট কাউন্টার। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, ওই টিকিট কাউন্টারের ঘরে বিদ্যুতের মিটারটি খারাপ হওয়ায় বিদ্যুৎকর্মীরা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে মেরামতের কাজ করছিলেন। ওই কাজের জন্য জেনারেটর চালানো হয়নি। তাই কম্পিউটার সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয় এবং টিকিটও দেওয়া যাচ্ছিল না। এনিয়ে রোগীর আত্মীয়দের কয়েকজন ক্ষুব্ধ হয়ে কাউন্টারের কর্মীদের সঙ্গে বাদানুবাদ শুরু করেন।
এই সময় চিকিৎসক তাপস সরকার রোগী দেখা থামিয়ে উঠে গিয়ে উত্তেজিত জনতাকে শান্ত করার চেষ্টা করেন। হাতে লেখা টিকিট দেওয়ারও কথা বলেন। অভিযোগ, ঠিক সেইসময়েই তাপসবাবুকে ঘিরে ধরে ধাক্কাধাক্কি শুরু করে কয়েকজন। হঠাৎই তাঁকে চড়-থাপ্পড় মারা হয়। চিকিৎসককে বাঁচানোর জন্য মহিলা স্বাস্থ্যকর্মীরাও ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রতিবাদ করেন। অভিযোগ, তাঁদেরও নিগ্রহ করা হয়। এমন পরিস্থিতি দেখে এরপরেই কর্তব্যরত সিভিক ভলান্টিয়ার্স ও নিরাপত্তরক্ষীরা দুজনকে আটক করেন।
জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত মহারাজা শেখের বাড়ি নদিয়ার কালীগঞ্জ এলাকায়। সাহিন শেখ কালনার হামিদপুরের বাসিন্দা। তাঁদের আটক করে নিয়ে যায় কাটোয়া থানার পুলিশ। কাটোয়া হাসপাতালের সুপার রতন শাসমল জানিয়েছেন, চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের মারধরের ঘটনায় তিনি দুঃখিত। একইসঙ্গে তিনি আশ্বাস দেন, এর বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তারপরেই অভিযোগ পেতেই সেই দুজনকে গ্রেফতার করে কাটোয়া থানার পুলিশ।