মোদীর গড় বলে পরিচিত হলেও গুজরাত বরাবরই ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য প্রসিদ্ধ। এখানের সুরাটের হীরে শিল্পের খ্যাতি জগৎ জোড়া। কিন্তু মোদী জমানায় মন্দার অর্থনীতির কবল থেকে মুক্তি পাইনি সুরাটের এই হীরে শিল্পও। যেহেতু বাজারে বিক্রিই নেই, তাই ব্যাপক ধাক্কা খেয়েছে হীরে ব্যবসাও। অনেক সংস্থাই ঝাঁপ বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে। কেউ আবার কর্মী ছাঁটাই করেই অবস্থা সামাল দিতে চাইছে। যার ফলে কাজ হারিয়েছেন হীরে শিল্পের সঙ্গে যুক্ত গুজরাতের মোট ৬০ হাজার মানুষ। এঁদের মধ্যে ১৩ হাজার সুরাটের।
প্রসঙ্গত, এখানে প্রায় ১৫ হাজার ছোট-বড় কারখানা হয়েছে। ৭ লাখ মানুষ তার ওপর নির্ভরশীল। তার মধ্যে ৬ লাখের বেশি মানুষই হীরে শিল্পের সঙ্গে যুক্ত। বছর দুয়েক আগে, ২০১৭ সালে দীপাবলির পর অনেক কারখানার কাজ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। তার ভেতর ৪০ শতাংশ কারখানা ছুটির পরও খোলেনি। ২০১৮ সালে প্রায় ৭৫০ হীরে কারিগর বরখাস্ত হন। শুধু তাই নয়। গুজরাত ডায়মন্ড ওয়াকার্স ইউনিয়নের তথ্যে জানা গেছে, গত বছর ১০ জনের বেশি কারিগর বেকারত্বের জ্বালায় আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন।
হীরে শিল্পের বেহাল দশায় চিন্তার ভাঁজ সোনি ডায়মন্ড বিজনেস ইনস্টিটিউটের শ্রায়ান সোনির কপালে। তিনি জানান, নীরব মোদী, মেহুল চোকসি এবং যতীন মেহতাদের প্রতারণার পর ব্যাঙ্ক ঋণ দিতে চাইছে না। তার ওপর নোটবন্দী আর জিএসটির জোড়া ধাক্কা। তাছাড়া সিন্থেটিক হীরেতে বাজার ছেয়েছে। বিদেশেও চাহিদা কমছে। সব মিলিয়ে লোকসানে চলা এই শিল্প এখন মৃত্যুর দরজায় দাঁড়িয়ে। সদ্য কাজ হারানো সুরাটের হীরে কারিগররাও সকলে একই কথাই বলছেন, এই পরিস্থিতি আমাদের জীবনে দুর্ভাগ্য ডেকে আনবে।