বাংলার মানুষ যাতে তাঁদের নিজেদের অভাব-অভিযোগ-মতামত জানাতে পারেন তাই গত ২৯ জুলাই শুরু হয়েছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নয়া কর্মসূচী ‘দিদিকে বলো’র পথ চলা। প্রথম থেকেই ব্যাপক সাফল্য পেয়েছে ‘দিদিকে বলো’। এই এক মাসেই পূর্ব বর্ধমানে মানুষের ভরসা হয়ে উঠেছে ‘দিদিকে বলো’। মানুষ জানেন শুধু একটা ফোনেই মিটবে সমস্ত সমস্যা।
দিদিকে বলোতে ফোন করে মাথার ওপর নিরাপদ আস্তানা পেয়েছেন কাটোয়ার বাসিন্দা মন্দিরা চক্রবর্তী। দুই ছেলেকে নিয়ে ছিটেবেড়ার ঘরে থাকতেন। ‘দিদিকে বলো’র শরণ নিয়েছিলেন। নবান্নর বার্তা পেয়ে গোটা ব্লক প্রশাসন চলে আসে মন্দিরাদেবীর কাছে। আপ্লুত মন্দিরা জানিয়েছেন, ‘সত্যি একটা কাজের মতো কাজ করেছেন দিদি।’ মন্দিরার মতই মাথা গোঁজার ঠাই ছিল না মানেকা ঘোষ, অমল চক্রবর্তীদের। খাওয়াদাওয়া যেখানে যেমন আর শয়ন হট্টমন্দিরে গোছের অবস্থা। আর কষ্ট করতে হবে না অমল–মানেকাদের। রাজ্য সরকার বানিয়ে দিয়েছে ঝাঁ–চকচকে আবাসন। কাটোয়া শহরের ১৭ নং ওয়ার্ডে। থাকা–খাওয়ার এলাহি আয়োজন। সঙ্গে পোশাক, চিকিৎসা পরিষেবাও। বর্ধমান জুড়ে খুশির হাওয়া মমতার এই অভূতপূর্ব উদ্যোগে।
বর্ধমানের মঙ্গলকোটের এক অত্যন্ত দরিদ্র পরিবারের বউ মৌসুমি খাঁ। রান্না করার সময় আগুন লেগে যার শরীরের প্রায় অর্ধেকের বেশি পুড়ে যায়, অর্থাভাবে তিনি ভালো হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে পারছিলেন না। এখানেও সমাধান হয়ে এলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মৌসুমির পরিবার ফোন করল ‘দিদিকে বলো’তে। ব্যস! এক ফোনেই মুছে গেল যাবতীয় দুশ্চিন্তা। মমতার নির্দেশে কলকাতার বাঙ্গুর হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসার বন্দোবস্ত করা হয়।
‘দিদিকে বলো’র প্রচার পর্বে বিধায়করা তাঁর নিজের কেন্দ্রের কোনও গ্রাম বা শহরে সাধারণ মানুষের দরবারে হাজির হয়ে শুনেছেন তাঁদের সমস্যা ও অভিযোগের কথা। এলাকার বিশিষ্ট লোকজনের সঙ্গে আলাপচারিতা সেরে বিধায়ক-নেতাদের রাত্রিবাস করতে হয়েছে দলীয় কর্মীর বাড়িতে। পংক্তিভোজনও করতে হয়েছে সাধারণ মানুষ, কর্মী ও সমর্থকদের সঙ্গে। আই-পাকের তরফে যে পরিসংখ্যান এদিন উপস্থাপন করা হয়েছে, সেই অনুযায়ী গত ৩০ দিনে বিধায়ক ও নেতা মিলিয়ে পাঁচশোর বেশি তৃণমূল কর্তা রাজ্যের ১০২২টি গ্রাম-শহরে কর্মসূচি সেরেছেন। তৃণমূল সূত্রে বলা হয়েছে, আরও ৭০ দিন ধরে চলবে এই জনসংযোগ কর্মসূচি। টার্গেট ১০ হাজারেরও বেশি গ্রাম-শহরের সাধারণ মানুষের সঙ্গে জনসংযোগ করা।