কোচ বদল করেও জয়ের মুখ দেখল না মহামেডান। প্রথম দুটি ম্যাচের মতোই সোমবার কলকাতা প্রিমিয়ার লিগের তৃতীয় ম্যাচেও ড্র করল তারা রেনবো এসি’র বিরুদ্ধে। তিন ঘেরা মাঠের মধ্যে মহমেডান মাঠের অবস্থা সবথেকে সঙ্গীন। সাদা-কালো ব্রিগেডের মাঠ যেন আক্ষরিক অর্থেই খাটাল। তার উপর সোমবার খেলা শুরু হওয়ার এক ঘণ্টা আগে প্রবল বৃষ্টি হয় ধর্মতলা অঞ্চলে। ১৫ মিনিটের এই বৃষ্টিতে মহমেডান মাঠের সাইড লাইনের ধারে জল জমে যায়। তাই ১৩ মিনিট পর খেলা শুরু হয়।
জিততে না পারায় বদলায়নি মহমেডান মাঠের আবহও। সোমবার রেফারি প্রতীক মণ্ডলের একটি সিদ্ধান্তকে নিয়ে উত্তাল হল মাঠ। বৃষ্টির মতো জলের বোতল পড়ল মাঠে। সঙ্গে ইট, কাঠের টুকরো। রেড রোডের দিকের গ্যালারিতে মহমেডানের ক্ষিপ্ত সমর্থকদের সামাল দিতে যখন পুলিশ লাঠি, ঢাল নিয়ে হাজির, মাঠ পরিষ্কার করতে ব্যস্ত, তখন ইডেনের দিকের গ্যালারিতে আরও বড় ঝামেলা শুরু হয়ে যায়।
প্রেস বক্স থেকে দেখা যায় গাছের ডাল, ক্রিকেট বল হাতে নিয়ে ফেন্সিং টপকে রেনবো রিজার্ভ বেঞ্চের দিকে যেতে উদ্যত হচ্ছেন আর এক দল মহমেডান সমর্থক। ওই সময় রেনবো কোচ প্রশান্ত চক্রবর্তী হঠাৎ রেগে গিয়ে মাঠের পাশের জালে লাথি মারায় গন্ডগোল তীব্র আকার নেয়। প্রশান্ত বলতে থাকেন, ‘‘আমি মহমেডানের হয়ে চার বছর খেলেছি। আমাকে এ ভাবে গালাগালি করছে।’’ তাতেও ইটবৃষ্টি থামেনি। বরং তা আরও বাড়ে। গ্যালারিতে লাঠি নিয়ে উঠে পরিস্থিতি সামাল দেয় পুলিশ। খেলা বন্ধ থাকে প্রায় নয় মিনিট। মাঠের মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকেন ফুটবলারেরাও। এর পরে খেলা ফের শুরু হয়।
প্রথমার্ধে রেনবোর আক্রমণে যথেষ্ট ধার ছিল। ফেলিক্স চিডি -সুজয় দত্তদের দাপাদাপিতে মহমেডান স্পোর্টিং মাঠের র্যামপার্টের দিকে পেনাল্টি বক্সে অবস্থা করুণ হয়ে যায়। দ্বিতীয়ার্ধে মহমেডান স্পোর্টিংয়ের বিদেশি স্ট্রাইকার আর্থার, চাংটেরা সহজ পরিস্থিতিতে বল গোলে রাখতে পারেননি। আসলে ওই সময়ে নন কিকিং ফুট মাঠে ঠিকমতো রাখতেই পারছেন না ফুটবলাররা। নিজেদের মাঠে পরপর তিনটি ম্যাচ ড্র করার পর লিগের পরবর্তী ম্যাচ কল্যাণী স্টেডিয়ামে খেলতে চাইছেন মহমেডান স্পোর্টিং টিডি দীপেন্দু বিশ্বাস। সোমবার বিধানসভা অধিবেশন সেরে এসে তাঁবুতে পোশাক পরিবর্তন করে মহমেডান সাইড বেঞ্চে চলে যান দীপেন্দু। তীর্থঙ্কর সরকারকে মিডল হাফে নিয়ে আসেন দীপেন্দু। এতে মাঝমাঠ জমাট হলেও মহমেডান গোল পায়নি।
রেনবোর কোচ প্রশান্ত চক্রবর্তী গত বছর আই লিগে ভালো খেলা ফেলিক্স চিডির সঙ্গে কাজিমকে আপফ্রন্টে রেখেছিলেন। রেনবো ইতিবাচক ফুটবল খেললেও মহমেডান স্পোর্টিং কামরান ফারুক আর মুসা মুড্ডের সৌজন্যে গোল খায়নি। ৫৪ মিনিটে কাজিম রেনবোর পক্ষে দিনের সহজতম সুযোগটি নষ্ট করেন। আরেকবার কাজিমের শট কাদায় আটকে গেলে মহমেডান বেঁচে যায়। মহমেডানের মহম্মদ আমিরুল দ্বিতীয়ার্ধে রেনবো রক্ষণে ঝড় তোলেন। এই সময়ে বিদেশি রিচার্ড প্রবল পরাক্রম দেখানোয় মহমেডান কাঙ্খিত গোল পায়নি। তবে ৬৮ মিনিটে বক্সের মধ্যে রিচার্ড ফাউল করেন আমিরুলকে। রেফারি প্রতীক বিশ্বাস গোটা ম্যাচে স্মার্ট রেফারিং করলেও পেনাল্টি দেননি।