গতবার কলকাতা লিগে ইস্টবেঙ্গলের হয়ে হ্যাটট্রিক ছিল সুহেরের। তারপরেও তাঁকে বাতিল করা হয়। চলে গিয়েছিলেন নিজের রাজ্যের টিম গোকুলমে। এ বার কলকাতায় ফিরেই নায়ক। মুখে না বললেও, বুধবার রাতে সবুজ-মেরুন জার্সিতে সুহের যেন অলিখিত জবাব দিয়ে গেলেন ইস্টবেঙ্গলকেও। লাল-হলুদের দুই জোড়া বাতিল ফুটবলারই ডুরান্ড সেমিফাইনালে মোহনবাগানের নায়ক! আত্মপ্রত্যয়ী সুহের জানাচ্ছেন এবার ডুরান্ড কাপ জিতবে মোহনবাগানই।
মোহনবাগানের জয়ের জোড়া গোলের নায়ক সুহেরের কথায়, ‘গত মরসুমে ইস্টবেঙ্গলের হয়ে ভালো শুরু করেও ফিটনেসের অভাবে হারিয়ে গিয়েছিলাম। এ বার কিন্তু মোহনবাগানে এসেছি এই পণ করে যে, আর হারিয়ে যাব না।’ সুহেরের গলায় উচ্ছ্বাস, তাঁরই মতো তাঁরই কেরালার এক ফুটবলার উবেইদ অন্য সেমিফাইনালের নায়ক হওয়ায়। সুহেরের কথায়, ‘উবেইদকে অভিনন্দন। তবে ফাইনালে আমি আমার রাজ্যের টিম গোকুলমকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হতে চাই।’ এ দিনের জোড়া গোল সুহের উৎসর্গ তাঁর রাজ্যের বন্যাদুর্গতদের উদ্দশ্যে। তাঁর কথায়, ‘ফাইনালে চ্যাম্পিয়ন হয়েও আমি সেটা কেরালার বন্যাদুর্গতদের উৎসর্গ করতে চাই।
দু’বছর আগে সুহের অনেক স্বপ্ন নিয়ে কলকাতায় এসেছিলেন লাল-হলুদ জার্সি গায়ে দিয়ে জবির সঙ্গে জুটি বাঁধবেন বলে। কলকাতা লিগে সফল হলেও পরে জুটি ভেঙে যায় দু’জনের। চোট পেয়ে ছিটকে যান সুহের। বলছিলেন, ‘‘আরও গোল করতে হবে আমাকে। ফাইনালে কোচ যদি আস্থা রাখেন ফের গোল করব। ডুরান্ডও জিতব।’’ যে দল ছেড়ে সবুজ-মেরুন জার্সি পরতে এখানে এসেছেন, তাদের সঙ্গেই ফাইনাল খেলতে হবে। তাতে অবশ্য আলাদা কোনও অনভূতি নেই। নিজের রাজ্য কেরলের ক্লাবটির কাছ থেকে ট্রফি ছিনিয়ে নেওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে রয়েছেন। বললেন, ‘‘আমি যাদের সঙ্গে গত বছর গোকুলমে খেলেছিলাম, তাদের সাত-আট জন রয়েছে এই দলে। তবুও বলছি আমরা ফেভারিট। মোহনবাগানই জিতবে ট্রফি।’’
গোকুলমের মার্কাস জোসেফ এবং কিসেক্কা জুটি বুধবার রাতে সরাসরি হারাতে পারেনি ইস্টবেঙ্গলকে। টাইব্রেকারে জিতেছে। অন্য দিকে সুহেরের দু’টি গোল কিন্তু মসৃণ জয় এনে দিয়েছে কিবু ভিকুনার দলকে। বুধবার রাতে কোন গোলটা করে বেশি তৃপ্তি পেয়েছেন? এ দিন সতীর্থদের সঙ্গে সুইমিং পুলে নামার আগে সুহের বলে দিলেন, ‘‘প্রথমটা। ওটা আমাকে পুনর্জন্ম দিয়েছে। চোটের জন্য গত দু’বছর অনেক ক্ষতি হয়েছে। গোকুলমের হয়ে গত বছর তিনটি ম্যাচ খেলেছি। ফের কলকাতায় ফেরার পর মনে হয়েছিল, কবে গোল পাব। সেটা করে এবং দলকে ফাইনালে তুলতে পেরে দারুণ লাগছে।’’ জেতার পর গোয়া থেকে বন্ধু জবি জাস্টিন ফোন করেছিলেন সুহেরকে। মেসেজ করে মালওয়ালি বন্ধুকে লিখেছেন, ‘‘ডুরান্ড ফাইনাল দেখতে কলকাতায় যাচ্ছি। তোমার গোল দেখতে চাই।’’ যা পেয়ে আপ্লুত সুহের। জবিও ফোনে বললেন, ‘‘গোকুলম তো আমার রাজ্যের দল। সুহেরও বন্ধু। অনেক বন্ধু খেলছে। তাই ফাইনাল দেখতে যাচ্ছি।’’