২০১২ সালে বিধানসভায় অধিবেশন চলাকালীন মোবাইল ফোনে পর্নো দেখায় মশগুল থাকতে দেখা গিয়েছিল বিজেপির তিন মন্ত্রী লক্ষ্মণ সাভরি, সিসি পাটিল এবং কৃষ্ণ পালেমারকে। হাতেনাতে ধরা পড়ার পরই কর্ণাটক মন্ত্রীসভা থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন তাঁরা। এই ঘটনা সেসময় বেজায় অস্বস্তিতে ফেলে দিয়েছিল গেরুয়া শিবিরকে। সেই ঘটনার ৭ বছর পর ওই তিন ‘দাগি’র দু’জন পাটিল এবং সাভরিকে ফের মন্ত্রীসভায় জায়গা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী বি এস ইয়েদুরাপ্পা।
২০১৮ সালের বিধানসভা নির্বাচনে সিসি পাটিল বিধায়ক হিসাবে নির্বাচিত হলেও সাভারি নন। গত বছর কর্ণাটক বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেস প্রার্থীর কাছে হেরেছেন তিনি। তবে তাঁর আসল ‘কৃতিত্ব’ অন্য জায়গায়। হালে কংগ্রেস-জেডিএস জোট সরকার ভাঙায় সাভারির উল্লেখযোগ্য ভূমিকা আছে। যে ১৭ জন বিধায়ক বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিলেন সাভরি তাঁদের মধ্যে ৬ জন বিধায়ককে কংগ্রেসের সঙ্গ ছাড়তে বলেছিলেন। তাই জোটের ১৭ জন বিধায়ককে ভাঙানোর ব্যাপারে তাঁর কৃতিত্বকে স্বীকৃতি দিতেই তাঁকে মন্ত্রীসভায় এনেছেন ইয়েদুরাপ্পা।
উল্লেখ্য, ২০১২ সালে পর্ন দেখার ব্যাপারটা ধরা পড়ে যাওয়ার পর বেশ বীরত্বের সঙ্গে সাফাই দিয়েছিলেন সাভারি। জানিয়েছিলেন শিক্ষা অর্জন করতেই ওই ভিডিও দেখা। বলেছিলেন, ‘আজকাল ম্যাঙ্গালোরের রেভ পার্টির খুব রমরমা। সেই রেভ পার্টি স্ক্যান্ডাল নিয়ে বিধানসভায় আলোচনা হওয়ার কথা ছিল। ওইসব পার্টিতে কী কী হয়, এমনকী কীভাবে ধর্ষণও হয়, তা দেখাতেই ম্যাঙ্গালোর থেকে এক পরিচিত তার ভিডিও ক্লিপ পাঠায়! আমরা শুধু তা দেখে পরিস্থিতি বোঝার চেষ্টা করছিলাম। যাতে বিধানসভায় আলোচনা করতে পারি।’
এক সময় উত্তর কর্ণাটকের খুব শক্তিশালী নেতা হিসাবেই পরিচিত ছিলেন লক্ষ্মণ সাভারি। তবে ওই পর্ন কেলেঙ্কারির পর দলে কোণঠাসা হয়ে পড়েছিলেন লিঙ্গায়েত সম্প্রদায়ের বাহুবলী, তিনবারের বিধায়ক, রাজ্য বিজেপির অন্যতম বিত্তশালী নেতা সাভারি। শেষমেশ দল এবং মন্ত্রীপদ দু’টোই ছাড়তে হয়েছিল তাঁকে। বাধ্য হয়েই তিনি কংগ্রেসে যোগ দেন। তবে এবার দলে ফিরেই তাঁর মন্ত্রীত্ব পাওয়ার বিষয়টিকে ভালভাবে নিচ্ছেন না রাজ্য বিজেপির নেতা-কর্মীরা। ফলে তলে তলে কর্ণাটক বিজেপির অন্দরে বৃদ্ধি পাচ্ছে ক্ষোভের চাপা আগুন।