দেশের শিক্ষাব্যবস্থাকে শিকেয় তুলে দিতেই কি উঠেপড়ে লেগেছে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ(আরএসএস)? দিন কয়েক আগেই প্রকাশ্যে এসেছিল, নাগপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বি.এ ইতিহাসের দ্বিতীয় বর্ষের পাঠ্যসূচীতে জায়গা নিতে চলেছে জাতি গড়তে সঙ্ঘের ভূমিকা! এ রাজ্যে হাবড়ার একটি স্কুলে গত ১০ দিন ধরে শিশু-কিশোরদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল আরএসএসের বিরুদ্ধে। তারপর নতুন জাতীয় শিক্ষানীতির খসড়া নিয়ে হইচই করার পরও থামেনি তারা। এবার শিক্ষা ব্যবস্থার গলদ খুঁজে সংস্কারের দাবিতে নামল আরএসএস।
জানা গেছে, ইংরেজির ওপর ‘অযৌক্তিক’ নির্ভরতা কমানো থেকে বিদ্যালয়ে বৈদিক গণিত চালু করার মতো প্রস্তাব নিয়ে দিল্লীতে আসছেন সরসঙ্ঘচালক মোহন ভাগবত। ‘জ্ঞান উৎসব’ নামে এই অনুষ্ঠানে মানবসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী রমেশ পোখরিয়াল নিশঙ্ক যেমন থাকবেন, তেমনই থাকবেন প্রধানমন্ত্রীর দফতরের প্রতিমন্ত্রী জিতেন্দ্র সিংহ আর যোগগুরু রামদেবও। প্রসঙ্গত, আরএসএস সমর্থিত সংগঠন ‘শিক্ষা সংস্কৃতি উত্থান ন্যাস’ অনেক বছর ধরে দেশের শিক্ষাব্যবস্থার আমূল বদলের পক্ষে সওয়াল করে যাচ্ছে।
উল্লেখ্য, এই সংগঠনই এক সময় বলেছিল, জাতীয়তাবাদী মনোভাবের সঙ্গে রবীন্দ্রচেতনা খাপ খায় না। তাই ইংরেজি পাঠ্যপুস্তক থেকে রবীন্দ্রনাথ সম্পর্কিত অংশ বাদ দেওয়া উচিত। আর এবার তাদের উদ্যোগেই সপ্তাহান্তে দু’দিনের বিশেষ সম্মেলনের আয়োজন করা হচ্ছে দিল্লীতে। মোহন ভাগবতের উপস্থিতিতে এই সম্মেলনে আলোচনা হবে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষাগুলির কাঠামো কীভাবে পরিবর্তন দরকার। কিছু কিছু ক্ষেত্রে যেমন ইংরেজির ওপর ‘অযৌক্তিক’ নির্ভরতা রয়েছে বলে সংগঠন মনে করে, তেমনই কেন্দ্রীয় ও রাজ্য স্তরে পরীক্ষা নেওয়ার ধরনেও গলদ আছে বলে তাদের দাবি।
সংগঠনের সচিব অতুল কোঠারি জানিয়েছেন, সরকার শিক্ষা নীতির খসড়াতে সংগঠনের মত অনুযায়ী অনেক কিছু রেখেছে, আরও অনেক করা বাকি। সে প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে সরকারকে। যেমন সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রস্তাব, পাঠ্যক্রমে বৈদিক গণিত চালু করা হোক। এর ফলে নাকি ক্যালকুলেটরের ওপর নির্ভরতা কমবে! সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা দীননাথ বাত্রা আগেই ভারতের চিরাচরিত জ্ঞান পদ্ধতি, বেদ পঠনের দাবি তুলেছিলেন। আর এবার সরাসরি বৈদিক গণিত চালু করার চেষ্টা শুরু করেছেন তাঁরা।