দ্বিতীয় মোদী সরকারের বাজেট পেশের পরই কমে গিয়েছিল গাড়ি ব্যবসার চাকা। গাড়ি বিক্রিতে ধস নামার ফলে বিপাকে পড়ে যন্ত্রাংশ উৎপাদনকারী সংস্থাগুলিও। অবস্থা এতটাই গুরুতর যে, এপ্রিল মাস থেকে ইতিমধ্যেই সাড়ে তিন লক্ষ কর্মী ছাঁটাই করেছে তারা। আগামী দিনে আরও ১০ লক্ষ কর্মী ছাঁটাইয়ের আশঙ্কা করছে গাড়ির যন্ত্রাংশ তৈরির সংস্থাগুলি। সবমিলিয়ে গাড়ি বিক্রি যে ক্রমাগত কমছে এবং সংস্থাগুলি যে বড় সমস্যার সামনে দাঁড়িয়ে, তা আগেই স্পষ্ট। কিন্তু মঙ্গলবার গাড়ি সংস্থাগুলির সংগঠন সিয়াম জুলাইয়ের যে বিক্রির পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে, তা ঠান্ডা স্রোত বইয়ে দিয়েছে অর্থনীতির শিরদাঁড়ায়।
কারণ, গত মাসে দেশের মধ্যে গাড়ির পাইকারি বিক্রি কমার হার দাঁড়িয়েছে প্রায় দু’দশকের মধ্যে সব চেয়ে বেশি। এর পরে শোরুম থেকে খুচরো বিক্রির তথ্য প্রকাশিত হলে ছবিটা আরও স্পষ্ট হবে। গাড়ির পাইকারি বিক্রি যে গত মাসেও ধাক্কা খেয়েছে, তার ইঙ্গিত মিলেছিল সংস্থাগুলির তথ্যে। এবার তা আরও স্পষ্ট ভাবে তুলে ধরেছে সিয়ামের পরিসংখ্যান। সেখানে বলা হয়েছে, দেশে সব ধরনের গাড়ির মোট পাইকারি বিক্রি ১৮.৭১ শতাংশ কমেছে। যে হার গত ১৯ বছরের সর্বোচ্চ। এর আগে ২০০০ সালের ডিসেম্বরে ২১.৮১ শতাংশ কমেছিল গাড়ির পাইকারি বিক্রি। আবার সার্বিক যাত্রী গাড়ির বিক্রি কমেছে টানা ন’মাস।
ওয়াকিবহাল মহলের বক্তব্য, গত কয়েক মাস ধরে টানা পড়ে চলেছে গাড়ির বিক্রি। কী পাইকারি, কী খুচরো। ফলে এখনকার পরিস্থিতি বিচ্ছিন্ন ভাবে শুধু গাড়ি শিল্পের সঙ্কট নয়। অর্থনীতির গতি কমারই একটি খণ্ডচিত্র। বলা হয়, গাড়ি তৈরি করতে প্রায় ১,৭০০ যন্ত্রাংশ লাগে। সুতরাং অনুসারী শিল্প যদি সমস্যায় পড়ে তবে তা গোটা অর্থনীতির পক্ষেই বিপদ সংকেত। এই পরিস্থিতিতে সিয়ামের ডিরেক্টর জেনারেল বিষ্ণু মাথুর স্পষ্ট বলেন, ‘এই মুহূর্তে সত্যিই সরকারের সহযোগিতা দরকার।’ তিনি জানান, গত দু’তিন মাসে গাড়ি সংস্থাগুলিতে কাজ হারিয়েছেন প্রায় ১৫,০০০ মানুষ। যাঁদের অধিকাংশই ছিলেন অস্থায়ী ও ঠিকা কর্মী।