সারা দেশে অর্থনৈতিক মন্দার বাজার। গাড়ি বাজারে নেমেছে বিরাট ধ্বস। জিডিপির নিরিখে বিশ্ববাজারেও পিছিয়ে পড়েছে ভারত। প্রায় দিন শেয়ারের বাজারের সূচক নিম্নগামী। দেশের অর্থনীতির এই বেহাল দশার তীব্র সমালোচনা করলেন রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র। শনিবার নবান্নে সাংবাদিক সম্মেলনে মোদী সরকারের নীতির তীব্র সমালোচনা করেন তিনি। তিনি বলেন, “দেশ তীব্র মন্দার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। নীতিপঙ্গুত্ব গ্রাস করেছে সরকারকে।”
এমনকি তিনি শিল্পপতিদের পরিস্থিতি নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন অর্থমন্ত্রী। তিনি বলেন, “কেন্দ্র শিল্পপতিদের গ্রেফতার করতে চাইছে। তাঁদের মধ্যে একটা ভয়ের পরিবেশ তৈরি হচ্ছে।” শুধু কেন্দ্রের সমালোচনা করেন নি। পাশাপাশি তিনি রাজ্যের অবস্থাও তুলে ধরেছেন। দেশের ধুঁকতে বসা অর্থনীতির সঙ্গে রাজ্যের অর্থনীতির যে বিস্তার ফারাক আছে সেটাই উঠে এসেছে তাঁর কথায়। তিনি বলেন, “এই অবস্থায় আমাদের রাজ্য অনেক উন্নতি করেছে। সব রাজ্যের মধ্যে জিডিপি বৃদ্ধির হারে আমাদের রাজ্য এক নম্বরে।” তিনি জানান, পশ্চিমবঙ্গের জিডিপি বৃদ্ধির হার ১২% এর উপরে। দ্বিতীয় স্থানে আছে অন্ধ্রপ্রদেশ, বিহার, তেলেঙ্গানা।
রাজ্যের অর্থমন্ত্রী জানান, শিল্প উৎপাদন, নতুন বিনিয়োগ, উৎপাদন, বিদেশি বিনিয়োগ সব ক্ষেত্রেই দেশের বৃদ্ধির হার নিম্নমুখী। এ বিষয়ে পরিসংখ্যানও তুলে ধরেন তিনি। তিনি জানান, নতুন প্রজেক্টে দেশে বিনিয়োগের হার শেষ ১৫ বছরে সব থেকে খারাপ।
এমন পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়েও রাজ্য সরকার রাজ্যের অর্থনৈতিক বৃদ্ধির ক্ষেত্রে অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে বলে জানান অমিত মিত্র। তিনি বলেন, “রাজ্য এই প্রচেষ্টার সুফল ভোগ করছে।”
অমিত মিত্র জানিয়েছেন, অটোমোবাইল সেক্টরে দেশের অবস্থাও খুব খারাপ। দুই চাকার গাড়ির ক্ষেত্রেও বৃদ্ধির হার নিম্নমুখী। অনেক ডিস্ট্রিবিউটর তাদের দোকান বন্ধ করে দিতে বাধ্য হচ্ছেন। তিনি আরও বলেন, “হন্ডা, মারুতির মত সব বড় সংস্থার বৃদ্ধির হার নিম্নমুখী। তাদের বিক্রি কমেছে অস্বাভাবিক হারে।” অমিত মিত্রের মতে, দেশের মানুষের জন্যে এটা মোটেই ভালো বিষয় নয়। তিনি মনে করছেন, এতে আগামী দিনে কর্মসংস্থানের বড় সংকট তৈরি হবে। এর দায় কেন্দ্র সরকারকেই নিতে হবে বলে মত তাঁর। মোদী সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, “কেন্দ্রীয় সরকার ব্যর্থ হয়েছে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি নিতে।”