দিনকয়েক আগেই ন্যাশনাল কনফারেন্সের প্রবীণ সাংসদ তথা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ফারুক আবদুল্লা তাঁর শ্রীনগরের বাসভবনের বাইরে সাংবাদিকদের কাছে মুখ খুলে বলেছিলেন, আমি দরজা ভেঙে আপনাদের সামনে এলাম। কারও কোথাও যাতায়াতের অনুমতি নেই। আমরা সবাই গৃহবন্দী। আবার কাশ্মীরের প্রাক্তন আইএএস অফিসার তথা জম্মু-কাশ্মীর পিপলস মুভমেন্ট পার্টির নেতা শাহ ফয়জল জানিয়েছিলেন, এই মুহূর্তে গোটা কাশ্মীর যেন ’তালাবন্ধ’। রাজ্যের ৮০ লক্ষ মানুষই ‘বন্দী’। রোগীরা কিংবা যাঁদের কার্ফু পাস রয়েছে, তাঁরাই শুধুমাত্র রাস্তায় বেরোতে পারছেন। তবে ১৯৪৭ সালে কাশ্মীরকে ভারতে যুক্ত করার জন্য চুক্তি করেছিলেন যে রাজা হরি সিং, তাঁর ছেলে কর্ণ সিং কিন্তু কাশ্মীর নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের পদক্ষেপকে পুরোপুরি ভুল বলতে রাজি নন। তিনি বলেছেন, ৩৭০ ধারার বিলুপ্তি বা জম্মু-কাশ্মীরকে ভেঙে দু’টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করার কথা আচমকাই ঘোষণা করা হয়েছে। তাতে সকলে আশ্চর্য হয়েছেন। কিন্তু এই সিদ্ধান্তের ফলাফল হবে সুদূরপ্রসারী। স্বভাবতই এতে বিপাকে পড়েছে কংগ্রেস।
প্রসঙ্গত, জম্মু-কাশ্মীরের শেষ সদর ই রিয়াসত ও প্রথম রাজ্যপাল ছিলেন কর্ণ সিং। তাঁর মতে, কেন্দ্রের সিদ্ধান্তে কয়েকটি ইতিবাচক ব্যাপার আছে। লাদাখকে যেভাবে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করা হয়েছে, তা অভিনন্দনযোগ্য। ৮৮ বছর বয়সী কর্ণ সিং-এর দাবি, তিনি ১৯৬৫ সালেই লাদাখকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করার কথা ভেবেছিলেন। তখন তিনি ছিলেন জম্মু-কাশ্মীরের সদর-ই-রিয়াসত। তাঁর দাবি, রাজনৈতিক ক্ষমতার সুষ্ঠু ভাগাভাগি হোক। জম্মু ও কাশ্মীর, উভয় অঞ্চলের কেউ যেন বঞ্চিত না হয়। চেষ্টা করা উচিত যাতে উপযুক্ত পরিস্থিতিতে জম্মু ও কাশ্মীরকে ফের রাজ্যের মর্যাদা ফিরিয়ে দেওয়া যায়। তাহলে সেখানকার মানুষ ভারতের অন্যান্য প্রদেশের মানুষের মতোই অধিকার ভোগ করতে পারবেন। তবে মোদী সরকারের তরফে যেভাবে দুই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা ও মেহবুবা মুফতিকে বন্দী করে রাখা হয়েছে, তার কড়া সমালোচনা করেছেন প্রাক্তন কংগ্রেস কর্মী কর্ণ সিং। তিনি বলেন, রাজ্যের প্রধান দুই রাজনৈতিক দলকে দেশবিরোধী বলা উচিত নয়। বৈধ রাজনৈতিক দলগুলির নেতাদের অবিলম্বে মুক্তি দেওয়া উচিত।